পঞ্চাশোর্ধ ‘তরুণ-তরুণীদের’ বাধনহারা একটি দিন

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | 2024-04-17 17:24:04

চট্টগ্রামের ভাটিয়ারি গলফ ও কান্ট্রি ক্লাব। এর মিলনায়তনে মঞ্চে গান গাইছিলেন সন্দ্বীপন দাস, রন্টি দাস ও অনন্যা। আশির দশকের জনপ্রিয় গানগুলি তাদের কণ্ঠে অন্যরকম আমেজ দিচ্ছিল। একই সঙ্গে ফোক গান ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানও গাইছিলেন তারা। এ সময় মঞ্চের সামনে ছিলেন ৫৪ থেকে ৫৬ বছর বয়সী কিছু ‘তরুণ-তরুণী’। শিল্পীদের গানের পাশাপাশি তারা কণ্ঠ মেলাচ্ছিলেন আর নাচছিলেন।

আসলে অনুষ্ঠানটি ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ১৯৮৭ সালে এইচএসসি পাস করাদের পূনর্মিলনী ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনের। ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠানটি হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত যারা ছিলেন তাদের মধ্যে উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা, আমলা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শীর্ষ ব্যবসায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতাসহ নানা পেশায় প্রতিষ্ঠিতজনেরা। স্বাভাবিক সময়ে তারা নিজেদের পেশা ও বয়সের কারণে অনেকটায় গম্ভীর থাকেন। নিজেদের আড়ালে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু এদিন সহপাঠীদের পেয়ে তারা যেন হয়েছিলেন বাধনহারা। যেন ফিরে গিয়েছিলেন তারুণ্যে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া বন্ধুদেরমধ্যে অনেকের সঙ্গে অনেকের যোগাযোগ ছিল। তারা কুশল বিনিময়ের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছেন। আবার অনেকের সঙ্গে দেখো হয়েছে ৩৭ সছর পর। কলেজ শেষ হওয়ার পর দেখা না হওয়া অনেককেই ফিরে পাওয়া গেছে অনুষ্ঠানে। নষ্টালজিক হয়ে পড়েন সবাই। একই সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও উপভোগ করেছেন বয়সী তরুণদের এই উল্লাস।

উল্লাস আর হৈচৈ দেখে একজনের কন্যা বলে উঠে,‘‘ বাবার বন্ধুরা খুবই কিউট। সবাই স্মার্ট আর প্রতিষ্ঠিত। খুবই ভাল লাগছে।”

আরেকজনের মুখে শোনা গেল, ‘’ বাবার এই চেহারা আগে কখনো দেখিনি। বাবা হই-হুল্লোড় করেন কিংবা দলবেঁধে নাচতে পারেন সেটা আমার ধারণার বাইরে ছিল।

পেশাগত কারণে রাজশাহী অবস্থান করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক কষ্ট নিয়েই বন্ধুদের বলেছেন, ‘‘না-ই বা পারলাম উপস্থিত থাকতে, তবুও অনুষ্ঠানটা যে সুন্দর ও সার্থক হয়েছে, তা ছবি আর ভিডিওতে দেখে আনন্দিত হয়েছি। হয়তো ভবিষ্যতে এরকম কোন আয়োজনে আমিও শরীক হতে পারবো।”

সারা দিনের অনুষ্ঠানটিতে ছিল স্মৃতিচারণ, আড্ডা, গান আর খাওয়া দাওয়া তো ছিলই। ভাটিয়ারি গল্ফ ক্লাবের নান্দনিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ সবাই প্রচন্ড গরম ঠেলেও মেতেছিলেন ছবি তোলার উৎসবে। বিকেল সাড়ে চারটায় ‘‘এসো হে বৈশাখ’’ গানটি দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর