কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়ক: ঈদ উপলক্ষে পুরোদমে চলছে সংস্কার কাজ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর | 2024-03-30 00:11:05

৬৪৩ কোটি ব্যয়ে পুরোদমে চলছে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্ত করণ ও সংস্কার কাজ। 

শুক্রবার (২৯ মার্চ) মেহেরপুরে গাংনী উপজেলার পোড়াপাড়া অংশে পাথর-বিটুমিনের আস্তরণ দেওয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ সড়কটি পেতে যাচ্ছে এক নতুন রূপ। এছাড়াও জনপ্রশাসনমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় সদর উপজেলার একটি বড় অংশ ফোরলেনে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।

মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) তত্ত্বাবধানে মেহেরপুরের মেসার্স জহিরুল লি. এ সড়কের তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে। মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে গাংনী উপজেলার তেরাইল কলেজ পর্যন্ত এ তিনটি প্যাকেজের কাজ পুরোদমে চলমান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরাজীর্ণ গাড়াডোব থেকে বাশবাড়ীয়া পর্যন্ত অংশে বিটুমিন ও পাথরের আস্তরণ দেওয়া শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে। 

জানা গেছে, সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করছে মেসার্স জহিরুল লি.। আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে বিটুমিন ও পাথরের মিশ্রণ এবং যন্ত্রের মাধ্যমেই নির্মাণ করা হচ্ছে সড়ক। যার ফলে দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে সড়ক সংস্কার কাজ।

সংস্কারকাজ তদারকিকালে মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহীন মিয়া বলেন, বেজ কোর্সের কাজ চলমান আছে। এ কাজটি আমরা দুই লেয়ারে করে থাকি। যার থিকনেছ ১১০ মিলিমিটার। এ কারণে এটি দুই লেয়ারে করতে হবে।

ঈদে ঘরমুখো মানুষের চলাচল নির্বিঘ্নে করতে সবচেয়ে বেশি জরাজীর্ণ অংশের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে কুষ্টিয়া ত্রিমোহনী পর্যন্ত চলমান এ সংস্কার কাজের মেহেরপুর জেলার অংশ প্রায় ৩০ কিলোমিটার। সংস্কার ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৩ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৫০ ভাগের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের মান নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

জানা গেছে, ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে তিনটি প্যাকেজের কাজ পূর্ণ গতিতে চলমান। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগামী ডিসেম্বরে পুরো কাজ সম্পন্ন বলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সওজ প্রকৌশলীরা।

গাংনী উপজেলার গাড়াডোব থেকে বাশবাড়ীয়া পর্যন্ত অংশের কাজের প্রথমে বিদ্যমান কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়। সেখানে বেজ ওয়ান হিসেবে পাথর আর বালুর মিশ্রণ দিয়ে রুলার করা হয়েছে। এরপরে বেজ কোর্সের কাজ হিসেবে বিটুমিন আর পাথর দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে এর উপরে আরও একবার চূড়ান্তরুপে পাথর আর বিটুমিনের আস্তরণ দেওয়া হবে। 

এদিকে রাস্তা সংস্কার কাজ দ্রুত চলমান থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এ সড়কে চলাচলকারীরা। যানবাহন চালকরা বলেন, সড়কটিতে যানবাহন চালাতে গিয়ে বেশ ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। তাছাড়া খানাখন্দে ভরা সড়কটি এক প্রকার দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা হিসেবেই চিহ্নিত ছিল। সংস্কার কাজের মাধ্যমে রাস্তা যেমনি প্রশস্ত হচ্ছে, তেমনি কয়েক লেয়ারে পাথর ও বিটুমিনের আস্তরণে চলাচল হচ্ছে নির্বিঘ্নে। যা পথচারীদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে।

এদিকে মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে আলমপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা ফোরলেনে উত্তীর্ণ হচ্ছে। বিদ্যমান প্রকল্পে কলেজ মোড় থেকে গাংনীর দিকে প্রায় এক কিলোমিটার ফোরলেন ছিল। এছাড়াও গাংনী শহরে প্রায় চার কিমি এবং বামন্দী বাজারে প্রায় এক কিমি ফোরলেন রয়েছে। পরবর্তীতে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সদর উপজেলার পুরো অংশ ফোরলেনের অনুমোদন হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, জনপ্রশাসনমন্ত্রীর ডিও লেটারে এ অভাবনীয় কাজটি অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই এর নতুন টেন্ডার হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফোরলেনের কাজটি শুরু হবে। তবে পর্যায়ক্রমে মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনী পর্যন্ত পুরো সড়কটি ফোরলেনে উত্তীর্ণ হবে বলে আশার কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর