ফেনী সরকারি কলেজে গণ ইফতার কর্মসূচিতে হামলা, আহত ৮

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী | 2024-03-19 02:10:45

ফেনী সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে গণ-ইফতার কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ফেনী সরকারি কলেজের বিবিএ'র শিক্ষার্থী আলী আহম্মদ ফোরকান, বিএসসির শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম, এমরান হোসেন এবং গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল মোহাইমিন আজিমসহ ৭ থেকে ৮ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আয়োজকরা।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিকালে সরকারি পাইলট হাই স্কুল মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি আয়োজনের বিষয়ে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করে ফেনী সরকারি কলেজের একদল শিক্ষার্থী। এ নিয়ে বিগত কিছুদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইফতার কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান আয়োজকরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী এদিন ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদে আসর নামাজ শেষে শিক্ষার্থীরা মাঠে জড়ো হতে থাকে। খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিবের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের জড়ো হওয়ার কারণ জানতে চায়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে আসেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি তোফায়েল আহমেদ তপু। তখন ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ক্রিকেট ব্যাট ও স্ট্যাম্প দিয়ে তাদের পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে আজিমকে কলেজের একটি কক্ষে আটকে রেখে অন্যদের বের করে দেওয়া হয়। ইফতারের আগে শিক্ষার্থীরা আবারও কলেজ গেইটে এলে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

আবদুল মোহাইমিন আজিম নামে আহত শিক্ষার্থী বলেন, ইফতারে অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীদের ওপর বিনা অপরাধে তারা ক্রিকেট ব্যাট ও স্ট্যাম্প দিয়ে হামলা করেছে। আমাকে আটকে রাখার আধঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে। একটি মুসলিম দেশে এসব ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।

ফোরকান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের বাধায় ইফতার মাহফিল পণ্ড হয়ে যায়। তাদের হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।

ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নোমান হাবিব বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে শিবিরের নেতাকর্মীরা কলেজে ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গণ-ইফতার নামে একটি আয়োজন দেখতে পাই। বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় তাদের কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর ইফতার আয়োজনের কোন কিছুই দেখিনি। একজন মুসলিম হিসেবে ইফতারে বাধা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। কলেজ মাঠে শিবির ও অন্যান্য সংগঠনের কিছু পরিচিত মুখ ছিলো। তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এমনটা হতে পারে। এখানে ছাত্রলীগের জড়িত থাকার বিষয়টি একদম ভিত্তিহীন।

ফেনী মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু গিয়ে কাউকে পায়নি। এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। এ ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর