‘রেস্টুরেন্টের ভেতর গিয়ে দেখি অনেক লাশ’

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 19:24:35

‘হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডের রাতে সারা রাত গুলির শব্দ শুনতে পায়। পরদিন পুলিশ আমাকে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের ভেতর নিয়ে যায়। যাওয়ার পর সেখানে অনেক লাশ ও রক্ত দেখতে পায়। অনেক জিনিসপত্র পড়ে থাকতে দেখি।’

রোববার (৬ জানুয়ারি) গুলশানের হলি আর্টিজান মামলায় আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে রেস্তোঁরার পরিচারক (ওয়েটার) আশরাফুজ্জামান তার জবানবন্দিতে এ কথাগুলো বলেন।

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

আশরাফুজ্জামানের সাক্ষ্যগ্রহণের পর রেস্তোঁরার ইলেকট্রিশিয়ান লাজারুশ সরেনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আগামী ১০ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।

আশরাফুজ্জামান তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান রেস্তোঁরায় ওয়েটার পদে কর্মরত ছিলাম। রাত্রি পৌনে ৯টার দিকে একটা বিকট শব্দ শুনতে পায়। শব্দটা কিসের জানার চেষ্টা করি। তারপর দেখি রেস্তোঁরার মেইন গেটের ভেতরে অস্ত্রধারী দুই যুবক দাঁড়িয়ে আছেন।’

‘এরপর আরও দুয়েকটা শব্দ শুনতে পাই। এরপর আমিসহ রেস্তোঁরার গেস্টরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করি। আমি পিৎজা রুমের পাশের পকেট গেট দিয়ে বের হয়ে লেকভিউ এ আশ্রয় নিই।’

তিনি বলেন, ‘আনুমানিক রাত ১২টার দিকে র‌্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশ করেন। তারপর আমাদের স্টাফ ও লেকভিউ স্টাফদের একটা কক্ষে আটকে রাখেন। আমরা সারারাত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের লোক আমাদের রুমের গেট খুলে দেয়।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে (স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ) হামলা চালানো হয়। এতে ১৭ জন বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা।

এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ নিহত হন।

পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর কমান্ডোরা অভিযান চালান। এতে ছয় হামলাকারী নিহত হন।

২০১৬ সালের ৪ জুলাই নিহত পাঁচ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে গুলশান থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

ঘটনায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় করাগারে থাকা ছয় আসামি হলেন রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ । 

আসামি শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ পলাতক আছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর