`সাম্প্রদায়িক ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগের ১৪টি আসন'

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 04:23:32

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খুলনা বিভাগের ১৪টি সংসদীয় আসনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

তিনি বলেছেন, ‘আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খুলনা বিভাগের ১৪টি সংসদীয় আসনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। সহিংসতার শিকার মানুষের নিরাপত্ত ও তড়িত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর দাবি করেছি। একই সঙ্গে চিকিৎসক রাখার প্রস্তাব করেছি।

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নিমূল কমিটি এ সভার আয়োজন করে।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘অপরাধ করবে, বিচার হবে না, অপরাধীরা দায়মুক্তি পেয়ে যাবে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অপরাধীদের শাস্তি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০১ ও ২০১৪ সালের সহিংসতার পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া হবে না। এজন্য দেশের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৬১ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। এরমধ্যে খুলনা বিভাগের ১৪টি আসন রয়েছে ‘

ঝুঁকিপূর্ণ আসনগুলো হলো, ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা), ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদর একাংশ), যশোর-৪ (বাঘারপাড়া, অভয়নগর), যশোর-৫ (মণিরামপুর), যশোর-৬ (কেশবপুর), মাগুরা-২ (শালিখা, মোহাম্মদপুর, মাগুরা একাংশ), বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট, মোল্লারহাট ও চিতলমারী), বাগেরহাট-২ ( সদর ও কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মংলা), খুলনা-১ (ডুমুরিয়া, ফুলতলা ও খানজাহান আলীর একাংশ), খুলনা-৬ (কয়রা ও পাইকগাছা), সাতক্ষীরা-২ (সাতক্ষীরা সদর) এবং সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি, দেবহাটা ও কালীগঞ্জ উপজেলা)।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বলেন, ‘এ এলাকাগুলোতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনকে বেশ কয়েটি প্রস্তাব দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনও আশ্বাস দিয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজাকার মুক্ত সংসদ চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন, বঙ্গীবর কাদের সিদ্দিকী, আসম রবরা জামায়াতকে বৈধতা দেয়ার জন্য ঐকফ্রন্টে যোগ দিয়েছে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছিল। সর্বশেষ কামলরা সেটি পূরণ করেছে। যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত ও তাদের দোসর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের পুর্নবাসনের দায়ে ড. কামালদের একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাদেরও বিচার হবে।’

মতবিনিময় সভায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘গণমাধ্যমে খবর পেলাম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পাকিস্তান দূতাবাসে মিটিং করেছে। আর লন্ডনে তারেক রহমান পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে গোপন বৈঠকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এ ষড়যন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তান এদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ভোটের মাধ্যমে অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশ। এদেশ পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের নয়। তারা পাকিস্তানে চলে যাক। নির্বাচনে কেউ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস করার চেষ্টা করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।’

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা শাখার সভাপতি হারুন অর রশিদ, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) যশোর জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক ডা. গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর