জীবনে কহনো স্বপ্নেও দেহি নাই হামাগোর একখান পাহা ঘর হবি। পেটই যেহানে চলে না সেহানে আবার ঘর পামু কই। রাস্তার পাশে সরকারি জমিতে পাটখড়ি দিয়ে চাপড়া তুলে কোন রহম পোলাপান নিয়ে থাকি। এহন শেখের বেটি হাসিনা ঘরও দেছে জমিও দেছে। হামাগো কি যে ভালো লাগতেছে তা কতি পারব না। হামাগো দেশের সব জমির মালিক মনে হইতেছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে এভাবেই নিজেদের অনুভূতির কথা প্রকাশ করছিলেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির উপকারভোগীরা। এ সময় তাদের সবার চোখেই ছিল আনন্দের অশ্রু।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের চাবি হাতে পেয়ে বালিয়াকান্দি জঙ্গল ইউনিয়নের পারুলিয়া গ্রামের লক্ষণ মন্ডলের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলে বৈদ্যনাথ মন্ডল (৪৫) বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার একটি পা নেই। আমার দুটি সন্তান। অন্যের জমি চাষ করে সংসার চালায়। থাকার কোন জায়গা ছিল না। নেই কোন জমিও। এখন আমি জায়গাসহ একটি পাকা ঘরের মালিক। ঘরের চাবি ও জমির দলিল হাতে পেয়ে মনে হচ্ছে পুরো বাংলাদেশই আমার, দেশের সব জমির মালিক আমি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায়। সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া গ্রামের মৃত দূর্গাচরণ দাসের স্ত্রী লক্ষী দাস (৭০) অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি রাস্তার পাশে সরকারি জমিতে ছেলেদের সাথে থাকি। আমার দুই ছেলে জামালপুর বাজারের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ঝড়-বৃষ্টি এলেই আমাদের কষ্টের কোন সীমা থাকেনা। এখন একটা নতুন ঘর পেলাম। মনে হচ্ছে নতুন জীবন পেয়েছি। শেখ হাসিনাকে যেন ভগবান ভালো রাখেন।
উল্লেখ্য, চতুর্থধাপে বালিয়াকান্দিতে ১২০ টি পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়। এ পর্যন্ত বালিয়াকান্দিতে মোট ৫২০টি অসহায় পরিবার পেলেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। তথ্য অনুযায়ী ‘ক’ শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার না থাকায় বালিয়াকান্দিকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
উপজেলা অডিটোরিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুল কালাম আজাদ, ইউএনও রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপকারভোগী ও সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গ।