সবিরন নেছা (৮৬) নামে এক বৃদ্ধা গত বুধবার মৃত্যুবরণ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। শুক্রবার ভোরে তার কবর দেখতে যান স্বজনরা। এ সময় নতুন কবরটির মাটি খোঁড়া ছিল। ভেতর থেকে আসছিল গোঙানোর শব্দ। স্বজনরা ভয়ে বিষয়টি স্থানীয় লোকজনসহ পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় কবরের মাটি সরিয়ে দেখতে পায়, ভেতরে লাশ কোলে নিয়ে বসে আছে এক যুবক।
এমন ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার জয়বাংলা বাজার সরকারি পাবলিক কবরস্থানে।
এ ঘটনায় সফিকুল ইসলাম (২২) নামের ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
সফিকুল ইসলাম উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকার ধুমেরকুঠি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবুজারের ছেলে। এ ঘটনায় মৃতের ছেলে আজহারুল ইসলাম (৫৫) বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১ মার্চ) সারাই ইউনিয়নের ধুমেরকুঠি চাদমিয়া পাড়া গ্রামের মৃত আছিমুল্যা হাগুড়ার স্ত্রী সবিরন নেছা (৮৬) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জানাজা শেষে তাকে জয়বাংলা বাজার সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়। শুক্রবার সকালে স্বজনরা কবর জিয়ারতে গিয়ে দেখেন, কবরের মাটি খোঁড়া এবং মানুষের গোঙানোর শব্দ। ভয়ে সেখান দূরে গিয়ে পুলিশসহ পরিবারের অন্য সদস্য ও স্থানীয় লোকজনকে জানান বিষয়টি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় কবরের ভেতরে লাশ কোলে নিয়ে বসে থাকা ওই যুবককে আটক করে।
নিহতের ছেলে আজহারুল ইসলাম বলেন, এই ছেলে আমার মায়ের কবরে কেন ঢুকেছিল, এটা বুঝতে পারছি না। এ ঘটনায় মামলা করেছি।
সারাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, আটক ওই যুবক নেশাগ্রস্ত। তিনি মানসিকভাবেও অসুস্থ। এর আগেও নেশার টাকা না পেয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা করেছেন। কয়েকবার এ নিয়ে শালিসও হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, আটক যুবক মানসিক রোগী। তবে এ ঘটনায় ধর্মানুভূতিতে আঘাত এবং কবরস্থানে অনধিকার প্রবেশ করে মরদেহের অসম্মান করার অপরাধে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক যুবককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে কবর থেকে যুবক আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা ভিড় জমে যায়।