গান গেয়ে রুদিতার স্বর্ণপদক

, জাতীয়

রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) | 2023-08-28 20:19:40

স্কুল পাঠ শুরুর আগেই চার বছর বয়সে গানে হাতেখড়ি। প্রতি শুক্রবার বাবার হাত ধরে ছুটতে হতো গানের স্কুলে। ওই বয়সে মন খেলায় পড়ে থাকলেও বাবার প্রবল ইচ্ছেতেই চলতে থাকে সংগীত সাধনা। একসময় বাবার ইচ্ছেটাই নিজের ধ্যানজ্ঞান হয়ে যায়। তাই এখন গান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারেন না লাবিবা ইসলাম রুদিতা।

সম্প্রতি জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০২০ এ দেশাত্ববোধক সংগীতে প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পেয়েছেন লাবিবা ইসলাম রুদিতা। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকায় এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে রুদিতার হাতে স্বর্ণপদক ও সনদপত্র তুলে দেন।

লাবিবা ইসলাম রুদিতা বলেন, জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। এখন পড়াশোনার পাশাপাশি গান নিয়ে চলার পথে এসব শিক্ষাকে কাজে লাগাতে চাই। সবাই যেন আমাকে গানের রুদিতা হিসাবে চিনে সেজন্য একজন ভালো শিল্পী হতে চাই।

রুদিতার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গিধাউষা গ্রামে। চার বছর বয়সে গৌরীপুর সংগীত নিকেতনের পরিচালক এমএ হাইয়ের কাছে গানের হাতে খড়ি হয় তার। পড়াশোনার পাশাপাশি ২০১৪ সালে শিশু একাডেমী ময়মনসিংহ শাখা থেকে সংগীতে তিন বছর কোর্স ও ২০১৮ সালে শিল্পকলা একাডেমী ময়মনসিংহ শাখা থেকে সংগীতে চার বছর মেয়াদী কোর্স সম্পন্ন করেন রুদিতা। এছাড়াও বিভিন্ন ওস্তাদের কাছ থেকে গানের তালিম নিয়েছেন।

২০১৯ সালে ছড়া গান গেয়ে দ্বিতীয় হয়ে রৌপ্য পদক পেয়ে রুদিতা জাতীয় পর্যায়ে প্রথম সাফল্যের দেখা পান।পরে ওই বছরেই ২০১৯ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় লোকসংগীতে প্রথমস্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান রুদতিা।এর বাইরে স্থানীয় পর্যায়ে বেশ কিছু পুরস্কার রয়েছে রুদিতার গানের সাফল্যের ঝুলিতে।

রুদিতা পড়াশোনা করছেন গৌরীপুর সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষে। তার সংগীত সাধনা ও গানের পরিচিত কলেজের সহপাঠী ও শিক্ষক সবারই জানা। তাই কলেজ ও কিংবা স্থানীয় কোনো অনুষ্ঠান এলেই ডাক পড়ে রুদিতার। ক্লাস-পরীক্ষা যাই থাকুক না কেন, গানের কথা এলেই রাজি হয়ে যান সানন্দে।

রুদিতার বাবা শফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, সন্তানের যেকোন ভালো স্বীকৃতি বা অর্জন বাবা-মায়ের জন্য আনন্দের। আমার স্বপ্ন ছিল রুদিতা গান গেয়ে জাতীয় পর্যায়ে সুনাম অর্জন করবে। আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি চাই মেয়ে গায়িকা নয় একজন ভালো শিল্পী হোক।

গৌরীপুর সংগীত নিকেতনের পরিচালক এমএ হাই বলেন, চার বছরের ছোট্ট রুদিতা যখন আমার কাছে গান শিখতে আসে তখন সে ঠিকমতো কথাই বলতে পারতো না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সেই ছোট্ট রুদিতা এখন গান গেয়ে জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক পেয়েছে। একজন শিক্ষক হিসাবে এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারবো না।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর