মাত্র ৯ মাসে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিমান্বিত মহাগ্রন্থ আল কোরআন মুখস্ত করে তাক লাগিয়ে বিস্ময়কর নজির স্থাপন করেছেন রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের জীবননালা আল -কারীম তাহফিজুল কোরআন মহিলা মাদরাসার হিফজ বিভাগের ১৩ বছরের দুই শিক্ষার্থী।
কৃতি ওই দুই শিক্ষার্থীর নাম মোছা. ফাতেমা খাতুন ও মোছা. সুমাইয়া খাতুন। তারা দুজনই রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের জীবননালা ও রুপিয়াট গ্রামের। ফাতেমা খাতুনের বাবার নাম মোহাম্মাদ মিরাজ মন্ডল। পেশায় একজন কৃষক। আর সুমাইয়ার বাবার নাম আইয়ুব মন্ডল। তিনি সৌদি প্রবাসী।
জীবননালা আল কারীম তাহফিজুল কুরআন মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মুহাম্মাদ শেখ মহিউদ্দিন মানিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, হিফজ শুরু করার পরেই আমরা লক্ষ্য করেছি তারা অন্যদের থেকে একটু ভিন্ন। ফাতেমা ও সুমাইয়ার মধ্যে ভিন্ন প্রতিভা অনূভব করি আমরা। তারপর থেকে আমরা তাদের প্রতি অধিকতর যত্নশীল হয়। যার ফলে আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা মাত্র ৯ মাসেই হিফজ সম্পন্ন করেছে, আলহামদুলিল্লাহ।
তারা খুব ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির মেয়ে।
ফাতেমা-সুমাইয়া ও মাদরাসার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি। এবং বলেন, আল্লাহ-তায়ালা যেন এদের মতো অসংখ্য কোরআনের হাফেজা বের করার তৌফিক দান করেন।
তিনি আরও জানান, নূরানি ও নাজেরা শাখায় পড়াশোনা শেষ করতে সময় লাগে প্রায় তিন বছর।সেখানে তাদের সময় লেগেছে মাত্র ৯ মাস। ফাতেমা ও সুমাইয়াদের ঐকান্তিক ইচ্ছা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকাদের প্রচেষ্টা ও পরিবারের সহযোগিতায় আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা এই মহা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। আমি তাদের সার্বিক উন্নতি কামনা করছি। তারা যেন বড় হয়ে ইসলামের আদর্শে নিজেদের পাশাপাশি সমাজকেও কোরআনের আলোয় আলোকিত করতে পারে।
সংগ্রামপুর দাখিল মাদরাসার সুপার আলহাজ হযরত মাওলানা মো. আবুল কাশেম বার্তা২৪.কমকে বলেন, এটি অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। আমরা মনে করি কোরআন মুখস্থ করা সবচেয়ে কঠিন। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ পড়া ও মুখস্ত করা হলো পবিত্র কোরআন শরীফ। যা আল্লাহ্-তায়ালা একটি সূরার মধ্যে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। কোরআন মুখস্থ করার মধ্যে আল্লাহর রহমত রয়েছে। যা আমরা এই দুই শিশুর জীবনাদর্শনেও খুঁজে পাই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মুসলিমেরই উচিত আগে মহাগ্রন্থ আল-কোরআন মুখস্থ করে তারপর অন্য বই পড়া। তাহলে ইহজগত ও পরজগত উভয় জগতেই সে সম্মানীত হবেন।
মাদরাসার পরিচালক মুহাম্মাদ মহিউদ্দীন মানিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মাদরাসায় ৫২ জন ছাত্রী ও ৩ জন শিক্ষিকা রয়েছে। মাদরাসাটি স্থাপিত হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। বর্তমান মাদরাসার বয়স ২বছর ১ মাস। অত্র মাদরাসায় ২টি ঘর রয়েছে এবং ৩টি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে। এখানে নূরানী, নাজেরা ও হেফজ বিভাগ রয়েছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকায় আমরা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছি। আশা করছি আল্লাহ-তায়ালা আমাদের সীমাবদ্ধতাকে দূর করে দিবেন।