মিথ্যা মামলায় নির্যাতন, সমাঝোতার চেষ্টায় পুলিশ!

, জাতীয়

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 16:33:06

বরিশালে চুরির মিথ্যা মামলা দিয়ে এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কাউনিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শম্ভু কাঞ্জিলালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশের পক্ষ থেকে সমঝোতারও প্রস্তাব দেয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার দিলীপ চ্যাটার্জী ভোলা (৫০) বরিশাল শহরের হাসপাতাল রোডের গুপ্তকর্নার সংলগ্ন স্টুডিও দোকানের মালিক। এর আগে তিনি ট্রান্সকম ডিপোর ডিলারের প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।

সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ভোলার স্ত্রী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কাছে চুরির অপবাদে নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

সঞ্জিতা রানী অভিযোগ করে বলেন, `শনিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে কাউনিয়া পুলিশ নগরীর হাসপাতাল রোডের স্টুডিও দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তার স্বামীর বিরুদ্ধে চুরির মামলা হয়েছে বলে পুলিশ তাকে জানায়। পরে পরিবারের পক্ষে খোঁজ নিতে কাউনিয়া থানায় গেলে সেখান থেকে জানানো হয়, ট্রান্সকম ডিপোর ডিলার এবং সময় এন্টারপ্রাইজের মালিক সঞ্জয় ঘোষ দোকানের পেপসি, সেভেন আপসহ দশ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে মামলা করেন।'

তিনি জানান, স্বামীর গ্রেপ্তারের পর তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে দেখা করতে দেয়া হয়না। পরে গুপ্ত কর্নারের মালিক পংকজ গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে দেখা করতে দেয়। এসময় তার স্বামী দাঁড়াতে পারছিল না। তাকে হামাগুড়ি দিয়ে আসতে হয়।

এসময় স্বামী ভোলা তাকে জানান, থানায় নিয়ে এসে থানা ভবনের দোতলায় বসে চার থেকে পাঁচজন পুলিশ তাকে নির্মম ভাবে পেটায়। পাশাপাশি চুরি করেছে বলে স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সাপোজিটার ও রোলেক্স ওষুধ সেবন করানো করানো হয়।

কোর্টে ওঠানোর আগে এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য এসআই শম্ভু তাকে কিছু টাকা পয়সা দেয়ারও প্রস্তাব করে বলে জানান সঞ্জিতা রানী চ্যাটার্জী।

এদিকে রোববার (২ ডিচসেম্বর)দুপুরে আদালত ভোলাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে ভোলা কারাগার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, `নির্যাতনের শিকার দিলীপ চ্যাটার্জী ভোলার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আর ইতোমধ্যে অভিযোগটি তদন্তের জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন উপ-পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।'

উল্লেখ্য, ভোলা দেড় বছর ধরে ট্রান্সকম ডিপোর ডিলার, সময় এন্টার প্রাইজের মালিক সঞ্জয় ঘোষের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছিলেন। কিন্তু বেতন ভাতা না দেয়ায় ২০ দিন আগে ঐ প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দেন ভোলা। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে ভোলার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দেন সঞ্জয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর