রাজশাহীতে আবারও ছড়াচ্ছে করোনা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-09-01 20:11:07

 

রাজশাহীতে আবার করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সবশেষ শনিবার রাজশাহীতে ৭২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত এক সপ্তাহ ধরেই রাজশাহীতে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষায় এ জেলায় সংক্রমণের হার উঠে যায় ২৯ শতাংশে। এতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের মাঝে। তবে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তেমন দেখা যাচ্ছে না। এখনও মাস্ক ছাড়াই চলাচল করছেন মানুষ। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীর ৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ১৮ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর শুক্রবার জেলার ৭২টি নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ হয়েছে ১৫টি। সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। শনিবার ৭২টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ১৫ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় এ দিন সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণের সময় রাজশাহীতে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হন। অমিক্রন ধরনের সময়ও একই অবস্থা দেখা যায়। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণের হার শূন্যে নেমে আসে। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিট। বন্ধ হয় করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রও (আইসিইউ)। কিন্তু জুনের প্রথম থেকেই দু’একজন করে আবার রোগী শনাক্ত হতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে রোগী।

কিন্তু মানুষের মাঝে সচেতনতার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। শহর ঘুরে দেখা গেছে, হাতে গোনা দু’একজন মানুষ ছাড়া কেউই এখন আর মাস্ক পরছেন না। সাধারণ মানুষ তো বটেই, সরকারি কর্মকর্তাদেরও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে মাস্ক ছাড়াই। ঘন ঘন হাত ধোয়া কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের অভ্যাসও ভুলে গেছেন বেশিরভাগ মানুষ।

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ-এর ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘কয়দিন হলো আমার মোবাইলটা বেশি বাজতে শুরু করেছে। মানে হচ্ছে আবার শুরু হয়ে গেছে। এবার কোথায় গিয়ে থামবে কে জানে! সরকারিভাবে কী পদক্ষেপ নিলো সেটা না ভেবে নিজের এবং প্রিয়জনের জীবন বাঁচানোর জন্য এখনই সবার সাবধান হয়ে যাওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘কয়দিন আগেই ভারতে সংক্রমণের হার ছিল ৪৫ শতাংশ। এটা ছিল আমাদের জন্য অশনি সংকতে। তাই যাঁরা এখনও তিন ডোজ টিকা গ্রহণ করেননি, তাদের দেরি করার কোন সুযোগ নেই। মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়ার অভ্যাসটা আবার গড়ে তুলতে হবে। অবিলম্বে সকল প্রকার জনসমাগম পরিহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।’

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুক বলেন, ‘করোনা আবার বাড়ছে। এখনও আমরা টিকাদানে জোর দিচ্ছি। যারা টিকা নেননি, তারা যেন দ্রুত তিন ডোজই নেন আমরা সে আহ্বান জানাচ্ছি। রোগী বেড়ে গেলে হাসপাতালও আবার প্রস্তুত হবে। তবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘মানুষের মাঝে সচেতনতা কম। যারা টিকা নিয়েছেন এবং শারীরীকভাবে সুস্থ তারা এবার আক্রান্ত হলেও খুব একটা সমস্যা হবে না। তারা বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিলেই হবে। কিন্তু আগে থেকেই যারা জটিল রোগে আক্রান্ত তাদের সমস্যা হবে। এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী আসেনি। তবে যদি আসেও তার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রথমে তিনটি ওয়ার্ডে রোগী রাখার চিন্তাভাবনা আছে। তখন ওয়ার্ডগুলোর রোগীদের অন্যখানে সরানো হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর