এক কলেজের ১৬ শিক্ষার্থী বুয়েটে

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী | 2023-09-01 22:24:11

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ১৬ জন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলফলে ওই প্রতিষ্ঠানের ১৬ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৩৯ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল এই প্রতিষ্ঠানটি থেকে।

এ বছর বুয়েটে ভর্তি সুযোগ পাওয়া ১৬ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাহিদ হোসেন রিদম ৫ম তম কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, সঞ্জয় -১৬১, ইমন ইসলাম ৪৪৪তম হয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে , আরাফাত আফ্রিদি রোমান ৫২৬ তম হয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে,আবু সায়েম-৫৩০, সজীব -৫৭০, তাহমিদ আহমেদ তনয় ৬৩৯ হয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, মাহমুদুল -৬৪০, মাহবুব -৭৬২, আজম-৭৬৬, নবদ্বীপ -৮০৮, সিয়াম মাহিম-৯৫৩, সুদীপ্ত কেলভিন -৯৮৯, এম এ এইচ কে লাবিব ১০৮৬ তম হয়ে বস্তু ও ধাতবকৌশল বিভাগে , শাফিন-১১১৬, জাকিয়া সুলতানা জীম ১২০৩ তম হয়ে নেভাল আর্কিটেকচার বা নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

এক সঙ্গে এত শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তি সুযাগ পাওয়ায় উচ্ছ্বাস ও আনন্দে ভাসছে শিক্ষার্থীরা, খুশি শিক্ষক ও অভিভাবকগণ।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরিট লিষ্টে ৫ম তম হয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নাহিদ হোসেন রিদম বলেন, প্রতিটা শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে যে বুয়েট বা মেডিকেলে ভর্তির, তেমনি আমার ও ছিল। আল্লাহর রহমত, বাবা মায়ের দোয়া আর শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ আমি ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। এটা আমার জন্য যে কত টা সুখের আনন্দের সে ভাষা আমার জানা নাই।

আর্কিটেকচার বা লেভাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া জাকিয়া সুলতানা মিম জানায়, দিন রাত পরিশ্রম করে আজ এই পর্যায়ে সে ৷ এই স্থানে আসার জন্য সব থেকে বেশি যেটা সাহায্য করে সেটি কলেজের পরিবেশ ও স্যারদের প্রচেষ্টা। এই ফলাফলে বাবা-মাও অনেক খুশি বলে জানায় সে।

সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক বলেন, আমরা এখানে শিক্ষার্থীদের গ্রিন-ক্লিন লার্নিং পদ্ধতিতে পড়ানোর চেষ্টা করি। এতে সবার মাঝে প্রতিযোগিতা ও মননশীলতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিবারই দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখান থেকে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ বছরেই ৩৯ জন মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। এসব সাফল্যের জন্য চলতি বছরের মার্চে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। সব মিলিয়ে এমন সাফল্যে আমরা গর্বিত।

প্রতিষ্ঠানটিতে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগেই পড়ার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা ক্লাস রুমেই সকল পাঠ শেষ করার চেষ্টা করি এবং সকল প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ক্লাস পরিচালিত হয়। এছাড়াও অভিভাবকদের সাথে প্রতিষ্ঠানের একটি সেতু বন্ধন থাকে যাতে বাড়িতে শিক্ষার্থীরা ঠিক মত তাদের পড়াশুনো অব্যাহত রাখে।

উল্লেখ, ১৯৬৪ সালে দেশের চারটি শিল্পাঞ্চলে গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল। দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সুবাদে এখানে গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জন্য দক্ষ, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষার্থী গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজে উন্নীত হয়। তবে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষার্থী গড়ে তোলার লক্ষ্য হলেও প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটি থেকে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পান উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী। ২০১৯ সালে কলেজটিকে সরকারিকরণ করা হয় এবং পুর্বের নাম পরিবর্তন করে সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ রাখা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর