তিন মাসের কোলের শিশু নিয়ে স্বামীর খোঁজে রেশমা!

, জাতীয়

সীরাত মঞ্জুর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2023-09-01 00:02:06

মায়ের কোলে চড়ে এসেছেন ছোট্ট শিশু রিহাদ। তিন মাস বয়স। জীবন-মৃত্যু সম্পর্কে এখনও জন্ময়নি যার জ্ঞান। সীতাকুণ্ডের ডিপো কন্টেইনারের আগুনে তার বাবা নিখোঁজ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের মধ্যে তার মা রেশমা বেগম খুঁজছেন তার বাবাকে।

সীতাকুণ্ডের ডিপোতে আগুন লাগার পর থেকে রেশমা বেগম তার স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছেন না। বিএম ডিপোতে তার স্বামী মোহাম্মাদ শাহজাহান কাভার্ড ভ্যানের চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ ও দগ্ধদের পরিচয় পেতে সোমবার (৬ জুন) সকাল থেকে চমেকে ডিএনএ সংগ্রহ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

চমেকে নিখোঁজদের খুঁজে পেতে ডিএনএর নমুনা দিচ্ছেন স্বজনরা। রিহাদের বাবাকে খোঁজে পেতে ডিএনএ নমুনা দিচ্ছেন তার মা। স্বামীকে না পেয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রেশমা বেগম। তিন মাসের সন্তান নিয়ে চমেকের করিডোরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে মা নমুনা দেওয়ার সময় কেঁদে ওঠে অবুঝ রিহাদ। তখন তাকে কোলে তুলে নিয়ে সান্ত্বনা দেন পুলিশের সদস্য সায়মা। এতেই রিহাদের কান্না থেমে যায়।

ফরিদুজ্জামানের মরদেহ শনাক্ত করতে তার মায়ের ডিএনএ নমুনা নেওয়া নেওয়া হচ্ছে

সকাল থেকে এভাবে রিহাদের মতো শিশুদের নিয়ে চমেকে আসছেন অনেকে। কেউ খুঁজছেন বাবা, কেউ ভাই, কেউবা তার স্বামী ও স্বজনদের। আর এদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে যাচ্ছেন পুশিল ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মী ফরিদুজ্জামানের মরদেহ শনাক্ত করতে তার বাবা-মা ও ভাই এসেছেন চমেকে। ফরিদুজ্জামানের মরদেহ শনাক্ত করতে তার মায়ের ডিএনএ নমুনা নেওয়া নেওয়া হচ্ছে।

এ সময় তার বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ফরিদুজ্জামান কিছুটা অসুস্থ বোধ করছিল। ওই সময় ফায়ার সার্ভিস অফিসে পাগলা ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। ফলে দায়িত্বের প্রয়োজনে আমার ছেলে আর ঘরে বসে থাকতে পারেনি। অসুস্থ শরীর নিয়েই বিএম কনটেইনার ডিপোতে ছুটে যায়। সেখানে যাওয়ার আগে একবার বাড়িতে ফোন করে। এর কিছুক্ষণ পর ওর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪১ জন নিহত হয়েছেন। ২২ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের মরদেহ ডিএনএ নমুনা টেস্ট করে হস্তান্তর করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর