হরিণ শিকারের অভিযোগে রাস মেলায় আটক ৫৭জন

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 12:26:00

পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সুন্দরবনের রাস উৎসব। সাগরে হাজার হাজার পুণ্যার্থীদের পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তিনদিনব্যাপী এ উৎসব।

কিন্তু প্রতিবারের মত এবারও সুন্দরবনের রাস মেলাকে কেন্দ্র করে বেপরোয়া হয়ে উঠে হরিণ শিকারিরা। একদিকে দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীরা যখন মেলার উৎসব উপভোগে ব্যস্ত। অন্যদিকে একদল শিকারি হরিণ শিকারে ব্যস্ত।

শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) অভিযান চালিয়ে ৫৭ জনকে আটক করেছে বন বিভাগ। আটককৃতদের বন আইনে মামলাও দেওয়া হয়েছে। এসময় হরিণের মাথা, চামড়াসহ বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার করেছে বনবিভাগের সদস্যরা।

সুন্দরবনের পশ্চিমাঞ্চলের বন বিভাগের তথ্য মতে, সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী রাস উৎসব। মেলাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থী ও পর্যটকরা আগমন করে। সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর মানুষ হরিণ শিকারে মেতে ওঠে। বনবিভাগের অভিযানে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে শুক্রবার ৫৭ জনকে আটক করেছে। এদের সকলেই রাস মেলার দর্শনার্থী ছিল।

দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ দুটি ট্রলার সুন্দরবনের পাটকোষ্টা মোরগখালী এলাকায় ঘুরছিল। এসময় সুন্দরবনের পুলিশের স্মার্ট টহল টিম তাদের থামতে বলে। পরবর্তীতে তল্লাশী চালালে ট্রলার থেকে হরিণের মাথা, চামড়াসহ বিভিন্ন অস্ত্র শস্ত্র বেরিয়ে আসে। ট্রলারগুলো থেকে হরিণ শিকারের ৫০ মিটার ফাঁদ, হাড়, ধামা, কুড়াল উদ্ধার করা হয়।

দুই ট্রলারে সর্বমোট ৫৭ জন হরিণ শিকারি ছিল। তারা সকলেই রাস মেলার উদ্দেশ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে আসে।

সুন্দরবনের টহলে থাকা স্মার্ট পেট্রোল টিম-১ এর প্রধান ও কাশিয়াবাদ থানার কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটো বলেন, তাদেরকে আটক করে কয়রা উপজেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বনবিভাগের আরেকটি সূত্র জানায়, সারাবছর সুন্দরবন থেকে যে পরিমাণ হরিণ শিকার হয়, রাস মেলাকে ঘিরে তার চেয়ে বেশি হরিণ শিকার হয়ে থাকে। নাইলনের ফাঁদ, জাল পেতে, স্প্রীং বসানো ফাঁদ, বিষটোপ, তির বা গুলি ছোড়ে, কলার মধ্যে বর্শি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা ফাঁদসহ পাতার উপর চেতনা নাশক ঔষধ দিয়ে নিধন করা হয়ে থাকে বিপুল সংখ্যক হরিণ। এরপর চামড়া, শিং সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পাঠিয়ে দেয়া হয় উপযুক্ত ক্রেতাদের কাছে। কখনো ঝামেলা এড়াতে মাটিতে পুঁতে বা সাগরে ফেলে দেয়া হয়।

লন্ডন ভিত্তিক ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাষ্ট অফ বাংলাদেশ ও জু-লজিক্যাল সোসাইটির তথ্যমতে, শিকারিদের হাতে সুন্দরবনে বছরে প্রায় ১০ হাজারের বেশী হরিণ মারা পড়ে । মেলা চলাকালীন দর্শনার্থী ও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব চোরা শিকারিরা সুন্দরবনের যে সকল এলাকায় হরিণের বিচরণ বেশী সেসব এলাকায় বিভিন্ন ফাঁদে হরিণকে কাবু করে শিকারিরা।

সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, আলোর কোল, কটকা, কচিখালী দুবলা চান্দেরশ্বর, বগি, চরখালী, তালপট্টিস অঞ্চলে হরিণের আনাগোনা বেশি থাকে।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর