শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছাবে তো?

খুলনা, জাতীয়

শরিফুল ইসলাম, ডিস্টিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 19:28:14

সরকার ঘোষিত ২০১৮ সালের মধ্যে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়িত করার উদ্যোগ সফল হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ২০১৮ সালের আর মাত্র বাকি আছে ২ মাস। এখনো নড়াইলের তিনটি উপজেলার কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মনিরামপুর-২ যশোরের অধীনে নড়াইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার ১৩ ভাগ মানুষ এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসেনি। লোহাগড়া উপজেলায় ১৯ ভাগ এবং কালিয়া উপজেলায় ৩৫ ভাগ মানুষ এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসেনি।

কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কয়েছিল এ বছর সারা দেশে কারেন্ট দেবে। বছর তো শেষ হতে গেল, আমাগে গ্রামে কারেন্ট তো এখনো আসল না।’

পটকেলবাড়ি গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের এখনো কেরোসিনের তেল দিয়ে বাতি জ্বালিয়ে পড়ালেখা করতে হয়।’

লোহাগড়া উপজেলার বাড়িভাঙ্গা গ্রামের মনিরুল ইসলাম ও হালনা গ্রামের দাউদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের এসব গ্রামের অধিকাংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।’

সদর উপজেলার ননীখির গ্রামের সুজিত বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা শহরতলিতে বসবাস করলেও আমাদের গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। এটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের বিষয়। অনেক দূরের এলাকার মানুষ বিদ্যুৎ পেলেও আমরা শহরের পাশে থেকে পাই না।’

নড়াইল পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) দিলিপ কুমার বাইন বার্তা২৪.কমকে জানান, সদর উপজেলায় মোট ৮৭ দশমিক ৮৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বাকি ১৩ ভাগ মানুষ এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসেনি। এই উপজেলায় মোট গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৪১ হাজার ৬৮০ জন। এখানে ১৬ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। শীতের কারণে বর্তমানে চাহিদা কম রয়েছে।

লোহাগড়া পল্লী বিদ্যুতের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মো. শরিফুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, ওই উপজেলায় মোট ৮১ দশমিক ৬৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বাকি ১৯ ভাগ মানুষ এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসেনি। এই উপজেলায় মোট গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৪২ হাজার ৩৬৬ জন। এখানে ১২ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। শীতের কারণে বর্তমানে চাহিদা কম রয়েছে।

কালিয়া পল্লী বিদ্যুতের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মো. রুবেল হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, উপজেলায় মোট ৬৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। বাকি ৩৫ ভাগ মানুষ এখনো বিদ্যুতের আওতায় আসেনি। এই উপজেলায় মোট গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। এখানে সাড়ে ৬ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন ক. লি. নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহেদ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের অধীনে ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার। এখানে গরমের সময় ৭ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। বর্তমানে ৪ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। পৌর এলাকায় ৯৮ ভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে।’

নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি দাবি করে বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় (কালিয়া উপজেলা ও সদরের একাংশ) ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ অংশে বিদ্যুতের সংযোগ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিছু এলাকায় কাজ চলছে। তবে এ বছরে সম্ভব না হলেও আগামী বছরের প্রথম দিকেই তা সম্পন্ন হবে।’

নড়াইল-২ (লোহাগড়া উপজেলা ও সদরের একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর