খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত গাছিরা

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 16:30:50

আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে শীত শুরু হবে। এরই মধ্যে ভোরে লতা-পাতা আর ঘাসের উপর ঝরে পড়ছে শিশির বিন্দু। শিশির ভেঙে গ্রামের চাষিরা ছুটে যাচ্ছে সবুজ ধানের ক্ষেতে। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গ্রামের গাছিরা।

এবার একটু আগেই শীতের দেখা মিলছে চুয়াডাঙ্গা জেলায়। দিনে সূর্যের খরতাপ আর রাতে কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ভোর থেকেই ব্যস্ত গাছিরা দা দিয়ে খেজুর গাছ কাটছে। কদিন পরেই গাছ থেকে গাছিদের প্রক্রিয়াজাত করা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হবে চিড়ার মোয়া, গুড় ও পাটালি। শীতের সকালে গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে খেজুরের রস দিয়ে বানানো হবে মুখরোচক পিঠা, পায়েস, ক্ষীর।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়াসহ আশপাশের গ্রামের মেঠো রাস্তার পাশে সারি দিয়ে লাগানো খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত গাছিরা। আঞ্চলিক ভাষায় এটাকে গাছ তোলা বলা হয়ে থাকে। এ সময় গাছিরা বিশেষ কায়দায় কোমরে রশি বেঁধে খেজুর গাছের উপরে উঠে। তোলা গাছে এক সপ্তাহ পরেই আবার হালকা কেটে তাতে নল লাগানো হয়। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।

গ্রামের খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছি আব্দুর রহমান জানান, খেজুরের রস দিয়ে আগাম গুড় ও পাটালি বানাতে পারলে লাভ বেশি হয়। সেই আশাতেই চলতি বছরও গুড় তৈরির দিকে ঝুঁকছে গাছিরা।

তিনি জানান, অনেক বছর থেকেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। এ রস থেকে তিনি গুড় ও পাটালি তৈরি করে জেলার বিভিন্ন শহর, হাট-বাজারে বিক্রি করেন।

একই গ্রামের গাছি রশীদুল জানান, ভোরে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। ৫০টি গাছ কাটতে একজন শ্রমিককে ২৫০ টাকা দিতে হয়। এসব গাছ থেকে ৩০ হাঁড়ি রস হয়। এক হাঁড়ি গুড়ের ওজন হয় ১৫-১৮ কেজি। বাজার ভালো থাকলে এক হাঁড়ি গুড় বিক্রি হয় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাঈম-আস-সাকিব জানান, আনুমানিক জেলাতে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে সদরেই খেজুর গাছের সংখ্যা বেশি। চলতি মৌসুমে জেলায় ২৫০০ মেট্রিকটন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর