হুমকির মুখে তিন ফসলি জমি

খুলনা, জাতীয়

মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 02:32:42

মেহেরপুরের মটমুড়া গ্রামের মাঠে জমির উপরি ভাগ (টপ সয়েল) কাটতে কাটতে তা যেন পুকুর খননে রূপ নিচ্ছে। এতে আশপাশের ফসলের জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তিন ফসলি জমিতে প্রকাশ্যে মাটি-বালু তুলে ইটভাটায় গেলেও দেখার কেউ নেই। ফলে হুমকির মুখে ওই মাঠের আবাদি জমি।

গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের মটমুড়া গ্রামের মাঠে এ মাটি-বালু তোলার মহোৎসব চলছে দিনরাত। মটমুড়া গ্রামের বাসিন্দা তোফাজ্জেল হোসেন ও তার ভাই খবির উদ্দীন এ কাজের উদ্যোক্তা। তোফাজ্জেল হোসেন একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও মেহেরপুর জেলা পরিষদ সদস্য।

ভুক্তভোগীরা জানায়, তোফাজ্জেল হোসেন ও খবির উদ্দীনের ইটভাটা রয়েছে। ওই ভাটার মাটি-বালুর চাহিদার জন্য কিছু দিন আগে থেকে তাদের ক্ষেতের মাটি কাটা শুরু হয়। তোফাজ্জেল হোসেনের বাড়ির পাশের মাঠটি তিন ফসলি জমি হিসেবে চাষাবাদ হয়। এ জমির উপরি ভাগ (টপ সয়েল) কাটতে কাটতে এখন পুকুর খননের দিকে যাচ্ছে। কোনো কোনো জায়গার গভীরতা হচ্ছে ১৫-২০ ফুট।

মটমুড়া গ্রামের আরোজ আলী বলেন, ‘তোফাজ্জেল হোসেন ও তার ভাই এবং আশপাশের আরও কিছু মানুষের জমি মিলে প্রায় ৫ একর জমিতে এ খনন কাজ হচ্ছে। এতে আমার ধান ক্ষেতে ভাঙন ধরেছে। খননের সময় পর্যাপ্ত পাড় না রাখা ও স্কেবেটার দিয়ে খননের ফলে আশপাশের ফসলি জমি মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে পড়বে বলে আমরা ধারণা করছি। কিন্তু তোফাজ্জেল হোসেন প্রভাবশালী বলে আমরা চাষিরা প্রতিবাদও করতে পারছি না।’

ভুক্তভোগী চাষিরা জানায়, এভাবে চলতে থাকলে আশপাশের জমিতেও পুকুর করতে বাধ্য হবেন চাষিরা। ভাঙনের হাত থেকে জমি রক্ষায় অনেকেই এই উদ্যোগ নিতে পারেন। এতে আবাদি জমি কমে গেলে এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার উপর আস্তে আস্তে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘আমি তো জোরপূর্বক মাটি কাটছি না। জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি কিনে নিচ্ছি।’

তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের অনুমতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেইতো এভাবে পুকুর খনন করছে।’

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কে.এম শাহাব উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে ফসলি জমি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল বলেন, ‘বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর