মাহিন্দ্রা-ইজিবাইক-অটোরিকশায় দখল রাজপথ

খুলনা, জাতীয়

মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 09:37:22

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কয়েকজন বিজ্ঞ বিচারক তখন বিচারকার্য পরিচালনা করছেন, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ও তখন কার্যালয়ে ছিলেন। এমন সময় বিকট উচ্চশব্দে কোর্ট চত্বর দিয়ে চলছে মাহিন্দ্রা!

তাহলেই ভাবুন, সংরক্ষিত এলাকায় যদি এই হয় অবস্থা- তাহলে মহানগরীতে কেমন বেপরোয়া হতে পারে এ যান?
মহানগরীর অধিকাংশ রাস্তায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে অতুল-মাহিন্দ্রা-ইজিবাইক ও অটোরিকশা। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই বেপরোয়া গতিতে এসব যান চালাচ্ছে চালকরা। ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এ যান নিয়ে বর্তমানে শঙ্কিত জনসাধারণ।

বিআরটিএ থেকে ৭শ মাহিন্দ্রার লাইসেন্স দেয়া হলেও নগরীর সড়কে প্রায় ১০ হাজার অতুল-মাহিন্দ্রা চলাচল করে। এছাড়াও ২৫ হাজারের বেশি ইজিবাইক ও অসংখ্য অটোরিকশাতো আছেই।

এসব যানবাহনের অবৈধ স্ট্যান্ড ও যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে প্রায় সারা বছরই যানজট থাকে নগরীর প্রধান অনেক সড়কে। এতে শিক্ষার্থী, পথচারী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ চরম দুর্ভোগ পোহায় হাজার হাজার বৈধ যানবাহন ও পথচারীরা।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে গড়ে উঠেছে এসব যানের স্ট্যান্ড। গত কয়েক বছর ধরেই খুলনা সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) ও খুলনা ওয়াসাসহ নীতি-নির্ধারণী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সভাসহ এসব বিষয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক সংস্কার, ফুটপাত দখলমুক্ত, অতুল-মাহিন্দ্রা ও ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পরবর্তী এ সিদ্ধান্ত আলোর মুখ দেখে না। ফলে সমস্যা নিরসন না হয়ে আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।

নগরীর গল্লামারী রোডে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যানজটে ভোগান্তির শিকার হওয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী সায়মা সুলতানা মীম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিনই ক্যাম্পাসে যেতে অসহনীয় যানজটের শিকার হই, মাঝে মাঝে জ্যামের কারণে মাঝ পথ থেকে হেঁটেই ক্যাম্পাসে যেতে হয়। অবিলম্বে যানজট নিরসনে কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবার দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে কেএমপির ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার সাইফুল হক বলেন, ‘অবৈধ যান ও চালকের বিরুদ্ধে সব সময়ই আমাদের অভিযান চলছে। অতুল-মাহিন্দ্রা চালক যাদের লাইসেন্স নেই, তারা খুব দ্রুত লাইসেন্স না করালে আইনের আওতায় আনা হবে।’

ইজিবাইক-অটোরিকশা প্রসঙ্গে তিনি জানান, নগরীতে চলাচলকারী কোনো ইজিবাইক বা অটোরিকশারই লাইসেন্স নেই। দ্রুতই খুলনা সিটি করপোরেশন বা বিআইটিএ এর সমঝোতায় নির্দিষ্ট সংখ্যক লাইসেন্স প্রদান করা হবে।

উল্লেখ, গত বছরের সেপ্টেম্বরে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, বৈধ কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করে জেলা প্রশাসন। এরপর আর কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ায় অতুল-মাহিন্দ্রা-ইজিবাইক-অটোরিকশার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। যতই দিন যাচ্ছে, আরও বেপরোয়া হচ্ছে এসব যান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর