২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: যেমন ছিলো প্রথম আইনি প্রক্রিয়া

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-01-12 12:32:03

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা হয় আওয়ামী লীগের সমাবেশে। এক যুগ পর এর বিচার কাজ শেষে রায় দেওয়া হচ্ছে। বিএনপি জোট আমলে তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে নানা চেষ্টা করা হয়। সাজানো হয় জজ মিয়া নাটক।

হামলার ঘটনায় পরদিন মতিঝিল থানায় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে। পরদিন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা দিতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।

অভিযোগ ছিলো, শুরু থেকেই তদন্তের গতি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল তৎকালীন সরকার। তদন্তের নামে পুরো ঘটনাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হয় সিআইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে। এমনকি হামলার শিকার আওয়ামী লীগের দিকেই সন্দেহের আঙুল তুলেছিল বিএনপি।

২০০৪ সালের ২২ আগস্ট বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে চেয়ারম্যান করে এক সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল জোট সরকার। সেই কমিশনও জোট সরকারের অপপ্রচারের পথ ধরেই চলেছিল। এক মাস ১০ দিনের মাথায় কমিশন সরকারের কাছে ১৬২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিল, কমিশনের সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ সন্দেহাতীতভাবে ইঙ্গিত করে, এই হামলার পেছনে একটি শক্তিশালী বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত।

ঘটনার ১০ মাসের মাথায় জজ মিয়া নামের এক যুবককে আটক করে ১৭ দিন রিমান্ডে রেখে গল্প সাজায়। কিছু সন্ত্রাসীকে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি আবদুর রশিদ ও তৎকালীন বিশেষ সুপার রুহুল আমিন। সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনিও সাজানো ছকে কথিত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যান। এই গল্প সাজানোর ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তাদের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন বলে পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।

এরপর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে নতুন করে তদন্তের উদ্যোগ নেয়। এতে বেরিয়ে আসে, বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর সহযোগিতায় গোপন জঙ্গি সংগঠন হুজি-বি জঙ্গিরা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার উদ্দেশ্যে ওই হামলা চালিয়েছিল। তদন্ত শেষে সিআইডির তখনকার এএসপি ফজলুল কবীর ২০০৮ সালের ১১ জুন হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আদালতে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন। তাতে ২২ জনকে আসামি করা হয়। সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ছাড়া বাকি আসামিদের সবাই হুজি-বির জঙ্গি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সিআইডি এ মামলার অধিকতর তদন্ত করে এবং ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়। তাতে তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক সহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর