পদ্মায় বিলীন হচ্ছে কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 04:23:07

কুষ্টিয়া: ধীরে ধীরে পদ্মা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ। কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কালোয়া অংশে হঠাৎ করে গত শনিবার রাতে ভাঙন শুরু হয়। এ সময় বাঁধের ওপর বসবাসরত কয়েকশ পরিবারের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত থেকেই তারা বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিতে শুরু করে।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। নদীর তীব্র স্রোতে জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙন ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিকরা। নদীর পাড়ের প্রায় দুইশ পরিবারের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে তারা বাড়ি-ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার গভীর রাতে মাত্র ৪০ মিনিটে বাঁধের প্রায় ১শ মিটার এলাকা ধসে যায়। রক্ষাবাঁধ ভেঙে স্থানীয় নওয়াব আলী ও শর্মি খাতুন দম্পতির অর্ধেক বাড়ি পদ্মারগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি অর্ধেক সরিয়ে নিতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। একই অবস্থা ইতি খাতুনের পরিবারের। তার বাড়িটি যেকোনো মুহূর্তে পদ্মায় বিলীন হয়ে যেতে পারে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানায়, দুইশ কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত শিলাইদহ কুঠিবাড়ী রক্ষা বাঁধে গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রথম ভাঙন শুরু হয়। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ওইদিন বাঁধের ৫০ মিটার এলাকা পদ্মারগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পদ্মার ভাঙন থেকে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি রক্ষায় মাত্র দুই মাস আগে বাঁধটি নির্মাণ করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের কালোয়া বাজার এলাকায় আগে যে স্থানে বাঁধ ধসে গেছে সেখানে আন্ডার গ্রাউন্ড আর্থ পরিস্থিতির কারণে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে কাজটি না করার ফলেই এখন ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে আসছিলেন। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে গত ৩০ জুন অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ দেখিয়ে কাগজে কলমে প্রকল্পটি হস্তান্তর করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রকল্পের নির্ধারিত পরিকল্পনাসহ নকশা লঙ্ঘন, অর্থ অপচয় এবং বরাদ্দকৃত টাকা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় না করে অব্যয়িত রাখায় ২শ কোটি টাকার নির্মিত এই প্রকল্পটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

কুঠিবাড়ী রক্ষাবাঁধ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের কালোয়া এলাকার কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর