সড়কে প্রশাসনিক নৈরাজ্য বন্ধে হুঁশিয়ারি

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 04:54:04

চট্টগ্রাম: বৈধ কাগজপত্র, লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও চালকের বিরুদ্ধে বিআরটিএসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানকে প্রশাসনিক নৈরাজ্য ও অর্থ বাণিজ্য বলে দাবি করেছে বিভিন্ন পরিবহন সংগঠনের নেতারা।

একই সঙ্গে সড়কে শৃঙ্খলা, মালিক-শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ ও যাত্রীসেবা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে সংগঠনটি। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবিসমূহ পূরণ না হলে চট্টগ্রামে সকল প্রকার পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে সড়কে নিরাপত্তা ও চালকদের বিরুদ্ধে বিআরটিএসহ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। চট্টগ্রামের প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ।

লিখিত বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময়েও আমাদের অনেক শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ ও মৃত্যুর পরেও আমরা ঝুঁকি নিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা সচল রেখেছি। এতে দেশের অর্থনীতি সচল ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা ব্যথিত, মর্মাহত ও চিন্তিত। কিন্তু এ সময়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের অজুহাতে বিআরটিএ, জেলা, সিএমপি (চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ) ও হাইওয়ে পুলিশ মামলা দিয়ে কোটি কোটি আদায় ও রিমান্ড দিচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের দোহাই দিয়ে বিআরটিএ, নামসর্বস্ব নেতার কুপরামর্শে ট্রাফিক পুলিশের হয়রানিতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আবুল কালাম আজাদ।

এছাড়াও যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া রাতারাতি মোটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ ২০১৮ আইন পাস হলে সারাদেশের পরিবহন মালিক, শ্রমিকরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলেও উল্লেখ করেন।

এ সময় তিনি ছয়টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিসমূহ হল- সাম্প্রতিক সময়ে সংসদে উত্থাপিত মোটর ভেহিকেল অধ্যাদেশ ২০১৭-১৮ আইন পাস হওয়ার পূর্বে যাত্রী সাধারণ, মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৮৩ সালের আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বলবৎ রাখা, বিনা দোষে মালিকের রিমান্ড না দেওয়া, বিআরটিএ ফিটনেস ও পারমিট নবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি বন্ধ এবং গণ ও পণ্য পরিবহনে আয়কর বৈষম্য দূর করা, গাড়ির ইকোনমিক লাইফের অজুহাতে ফিটনেস, পারমিট বন্ধ না রাখা এবং কাগজপত্র বিহীন গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গণ ও পণ্য পরিবহন টো/ ডাম্পিং না করা, গণ ও পণ্য পরিবহনের গাড়িকে কেইজ স্লিপের মেয়াদ থাকাকালীন পুনরায় মামলা না দেওয়া এবং সড়কে, মহাসড়কে ও উপসড়কে টেম্পু, সিএনজি, থ্রি হুইলারসহ সকল অননুমোদিত গাড়ি পুরোপুরি বন্ধ করা, সহজ শর্তে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, গণ ও পণ্য পরিবহনের কাগজপত্র হালনাগাদ করার জন্য জরিমানা মওকুফসহ ন্যূনতম ছয় মাস সময় দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের জ্যেষ্ঠ সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন,‘বিদ্যমান অবস্থার পরিপেক্ষিতে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ না করে একই গাড়িকে তিনবার মামলা, মালিক ও শ্রমিকদের রিমান্ড, জেল জুলুম দেওয়া হচ্ছে। যা মরার ওপর খড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান আশা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের কার্যকরী সভাপতি জহুর আহম্মদ, অতিরিক্ত মহাসচিব গোলাম রসূল বাবুল, মাহবুবুল হক, মোজাফর আহমদ, আমীর পারভেজ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর