অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি মজুচৌধুরীর হাট

চট্টগ্রাম, জাতীয়

হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 23:23:03

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট, যেখানে রয়েছে মেঘনা নদীর বিস্তীর্ণ জলরাশি। মনে হয় কিছুদূরেই নদীতে মিশে আছে বিশাল আকাশ। ইচ্ছে হয় ছুটে গিয়ে আকাশ স্পর্শ করতে। সূর্যের আলোয় মেঘনার পানিতে সৃষ্টি হওয়া আলোকরশ্মি সবার মন কেড়ে নেয়। চাহনি থাকে নদীতে ভেসে থাকা মাছের দিকে। অতীতের কষ্ট ও গ্লানিগুলো মুছে যায় নদী থেকে ভেসে আসা হিমেল বাতাসে। প্রকৃতি আর মেঘনার সৌন্দর্যে একাকার এই এলাকাটি। আর এসব সৌন্দর্যেই মুগ্ধ হয়ে ভিড় জমায় দর্শনার্থীরা।

সবুজের সমারোহ আর মেঘনার সৌন্দর্য দেখতেই দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত থাকে মজুচৌধুরীর হাটের মেঘনা নদী এলাকা। প্রতিদিনই এখানে দর্শনার্থীদের পদচারণা থাকে। তবে ধর্মীয় উৎসব কিংব ছুটির দিনে এই এলাকা দর্শনার্থীদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

নদী কিংবা সাগর সব সময়ই মানুষকে আকৃষ্ট করে। বিশেষ করে ভ্রমণ পিপাসুদের। আবার অনেকেই শত ব্যস্ততার মাঝেও মনকে সতেজ করতে এ জায়গায় ঘুরতে আসে। ছুটির দিনে পরিবার নিয়েও ঘুরতে দেখা যায় অনেককে। সবারই পছন্দনীয় স্থানের মধ্যে থাকে নদী উপকূলীয় এই এলাকা।

মেঘনার মতো দর্শনার্থীদেরও ঢেউ উঠে এখানে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকাটি দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। এখানে রয়েছে নদীর বিশাল জল¯স্রোত। যেখানে গড়ে ওঠেছে মেঘনা নদী ও রহমতখালী খালের সেতুবন্ধন স্লুইচ গেট। যার ওপর দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর গোধূলীর অপরূপ দৃশ্য দেখে শীতল হয়ে ওঠে মন। আর অতীতের সকল গ্লানি মুছে দিয়ে যায় দক্ষিণা বাতাস। মেঘনার বিশাল ঢেউ দেখতে ও নদীতে ঘুরতে রয়েছে নৌকা ভ্রমণের সুবিধা।

সদর উপজেলার চররমনিমোহন ইউনিয়নের অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি হচ্ছে মজুচৌধুরী হাটের মেঘনা নদীর এই অংশ। জেলাবাসীর কাছে এটি জনপ্রিয় স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘেরা এ স্থানটিতে আশপাশের জেলা থেকেও দর্শনার্থীরা এসে ভিড় জমায়।

জেলা শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে এই পর্যটনকেন্দ্রটি অবস্থিত। তবে দর্শনার্থীদের সমাগমেই এটি অঘোষিত পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এখানে আসার সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। শহরের উত্তর তেমুহনি ও গোডাউন রোড এলাকা থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে যাওয়া যায়।

আবার অনেকে রিকশাযোগে মজুচৌধুরীর হাটে ঘুরতে যান। সড়কের দুইপাশে বনবিভাগের গাছের সারির সৌন্দর্যের আভাস তাদের মুগ্ধ করে। শিশু কিশোররা ছবি তোলার জন্য সড়কের দু’পাশে ভিড় জমায়। তারা এ পরিবেশটি নিজেদের মতো করে উপভোগ করেন।

মেঘনা নদীকে ঘিরে আশপাশে গড়ে ওঠেছে জনবসতি। এখানে অনেক পরিবারের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায় হচ্ছে নদী। কেউ মাছ ধরে, কেউ পর্যটকদের নদী ভ্রমণে নিয়ে গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এটি লক্ষ্মীপুর জেলার একমাত্র লঞ্চ ও ফেরিঘাট। যেখানে ২১ জেলার হাজার হাজার যাত্রী প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করে।

ঘুরতে আসা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকার ইমরান মিরন বলেন,‘মজুচৌধুরীর হাট মেঘনা এলাকা আমার পছন্দের জায়গা। প্রায়ই বন্ধুদের সঙ্গে এখানে আসা হয়। এখানে এসে মনকে সতেজ করা ও অনেকক্ষণ আড্ডা দেওয়ার মতো পরিবেশ রয়েছে। এলাকার মানুষগুলোও দর্শনার্থীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের মাস্টার্স শেষ পর্বের ছাত্র জাবেদ হোসেন জানান, এখানে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসা-যাওয়া করে থাকে। তবে পরিকল্পিতভাবে এই এলাকাটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা গেলে দর্শনার্থীদের পদচারণা আরও বাড়বে। এতে পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরে আরও উন্নতি হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর