নারীদের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 02:02:23

নড়াইল: ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নড়াইলে অনুষ্ঠিত হল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। তবে ব্যতিক্রমী এ প্রতিযোগিতায় নারীরাও অংশগ্রহণ করেন। শহরের শেখ রাসেল সেতু থেকে বাঁধাঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার নদী নৌকা চালিয়ে পাড়ি দেয় তারা। জেলার বিভিন্ন স্থানের নারীদের ৫টি নৌকা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

জানা গেছে, দুপুর ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নৌকাবাইচ দেখার জন্য নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর হাজির হতে থাকে শহরের চিত্রা নদীর দুপাড়ে। যেন চিত্রাপাড়ে বসেছে হাজারো মানুষের মিলনমেলা।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ মিলে মোট ২০টি নৌকা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এক সময় গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় খেলা ছিল নৌকাবাইচ। দেশের বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত হত গ্রামীণ এ খেলাটি। এমন কোনো জেলা নেই যেখানে প্রতি বছর কমপক্ষে একবার নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা হতো না।

কিন্তু আধুনিক সভ্যতার বিবর্তনে দিন বদলে গেছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতা প্রতি বছর নড়াইল চিত্রা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিশ্ব বরেণ্য চিত্র শিল্পী এস এম সুলতানের ৯৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) চিত্রা নদীতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

চিত্রা নদীতে অনুষ্ঠিত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার এমপি।

জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু প্রমুখ।

নৌকাবাইচ দেখতে আসা দর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আমরা নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখে থাকি। তবে নারীদের নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা এবারই প্রথম দেখলাম। খুব ভালো লেগেছে।’

দর্শক মিতা বিশ্বাস, সুমি আক্তার বলেন, ‘নৌকাবাইচ আমাদের ভালো লাগে, তাই প্রতি বছর আমরা এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকি।’

সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু জানান, সুলতান সব সময় গ্রামীণ বাংলার সাংস্কৃতিকে লালন পালন করতেন। আর তার সেই আজীবনের লালিত স্বপ্নকে ধরে রাখতেই প্রতিবছর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর