বাংলাদেশকে ইয়াবার মাধ্যমে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে: সিএমপি কমিশনার

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 11:54:45

বাংলাদেশকে ইয়াবার মাধ্যমে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র রুখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদকবিরোধী সংগ্রাম চলছে। মূল বিষয় হচ্ছে, মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো ধর্মীয় উপদেশ দিয়ে কাজ হবে না। বড় ভাই হয়ে তাদের মাথায় হাত রেখে বোঝালেও কাজ হবে না। প্রয়োজনে আরও কঠোর হবে প্রশাসন। এ ব্যবসায় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে কোতয়ালী থানা কমিউনিটি পুলিশিং আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান এসব কথা বলেন।

সিএমপি কমিশনার বলেন, একমাত্র মাদক ব্যবসায়ী যদি মনে করে এই ব্যবসা করলে তার জীবনহানির আশঙ্কা আছে, তার জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলেই সে এই ব্যবসা ছেড়ে দেবে। মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে অস্ত্র আছে। সেই অস্ত্র উদ্ধারে আমাদের পুলিশ, র্যা ব যাচ্ছে। তারা অস্ত্রের ব্যবহার করছে। এতে অনেকের জীবনহানি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, আমি মনে করি, জীবনহানি হতে হবে। শান্তির জন্য অশান্তির জীবনহানি হতে পারে। তারা (মাদক ব্যবসায়ী) অস্ত্র হাতে নিয়ে আমাদের মোকাবেলা করতে চায়, আমাদের হাতেও অস্ত্রও আছে। সেই অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার আমাদের আছে। সুতরাং মাদক নিয়ন্ত্রণে জীবনহানি হতে পারে।

মে মাসের শুরুতে দেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। এতে দুই শতাধিক ‘মাদক বিক্রেতার’ প্রাণহানীর তথ্য দিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। এছাড়া গ্রেফতার হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি।

সিএমপি কমিশনার বলেন, ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত যদি আমরা রক্ষা করতে পারতাম তাহলে ইয়াবা দেশে ছড়িয়ে পড়ত না। সীমান্তের একটি পয়েন্টে যদি ১০ লাখ ইয়াবা ঠেকানো যেত তাহলে সেগুলো ১০০ জায়গায় ছড়িয়ে পড়ত না। এক পয়েন্টে ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ সহজ নাকি ১০০ পয়েন্টে?

তিনি আরও বলেন, সব দোষ যেন পুলিশের। অথচ যাদের ব্যর্থতার কারণে ইয়াবা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে তাদের নাম কেউ মুখে আনে না। দুঃখের বিষয় তাদের কথা মিডিয়াতেও আসে না। বিজিবি ও কোস্টগার্ডকেও ব্যর্থতার দায় নিতে হবে, এই মত দিয়ে তিনি বলেন, তারা কঠোর হলে ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হত। আমি আশা করব, বিজিবি ও কোস্টগার্ড শক্তিশালী হবে এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

ইয়াবা ব্যবসায় পুলিশের জড়িয়ে পড়া কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনজন এসআইকে হাতকড়া পরিয়ে জেলে পাঠিয়েছি। আমার অবস্থান স্পষ্ট, যে বা যারা ইয়াবার সঙ্গে যুক্ত তারা পুলিশের কেউ না। পুলিশ ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু ইয়াবার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। ইয়াবা ব্যবসা করতে হলে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিতে হবে।

রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠনগুলোকে তাদের ওয়ার্ড-থানা থেকে শুরু করে কোনো কমিটিতে মাদকের সঙ্গে যুক্তদের না রাখার অনুরোধ করেছেন সিএমপি কমিশনার।

নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলাসহ দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সিএমপি কমিশনার।

কোতোয়ালী থানা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আহ্বায়ক এএসএম সাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম, উপ-কমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসেন, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, চট্টগ্রাম মহানগর কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্য সচিব অহিদ সিরাজ স্বপন এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর