প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাইলেন রমার পরিবার

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 17:01:16

একটিবারের জন্য হলেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সুযোগ চেয়েছেন একাত্তরের বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর পরিবার। একান্ত সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনেক কিছু বলতে চেয়েছিলেন। তবে সময় ও সুযোগের অভাবে তিনি সেজো ছেলের কাছে তা বলে গেছেন।

শেষ জীবনে অর্থকষ্টে দিনানিপাত করেছেন একাত্তরের  রমা চৌধুরী। এরপরেও কারও কাছে সাহায্যর জন্য হাত পাতেন নি, কারও সহায়তা নেননি। ছোট ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর জুতা পরা ছেড়ে দেন। রাস্তায় হেঁটে হেঁটে নিজের লেখা বই বিক্রি করতেন। তিনি ১৮টি বই লিখেছেন। যেখানে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের বিজয়গাঁথা রচিত হয়েছে।

চট্টগ্রামের চেরাগী মোড়ের আজাদী গলির পাশে একটি ছোট্ট রুমে থাকতেন তিনি। অবসর সময়ে পোষা প্রাণীদের সাথে কেটেছে সময়।

একাত্তরে পাকিস্তানের বর্বরোচিত হামলায় হারিয়েছেন দুই সন্তান। স্বাধীনতার এত বছর পরেও সমাজকে আরও কিছু দেওয়ার ইচ্ছে থেকে  বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথ শিশুদের জন্য এতিমখানা করতে চেয়েছিলেন।

গ্রামের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে শেষ জীবন গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের  বোয়ালখালী উপজেলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি লিখেছিলেন 'গ্রাম বাংলায় চলো' কবিতা।

সোমবার ভোর ৪ টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) জীবনাবসান ঘটে এ মহীয়সী নারীর। তাঁর মৃত্যুতে সেজো ছেলে জহুর মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে অনেকে তাকে শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এসময় রমা চৌধুরীকে দেখতে আসেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন। তাকে দেখতে পেয়ে জহুর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে উঠে ' আপনি এতক্ষণ পর আসলেন, আমার মাতো মারা গেছে।' তখন মোসলেম উদ্দীন তাকে জড়িয়ে ধরে শান্ত্বনা দেন।

এসময় জহুরের সাথে কথা হয় বার্তা২৪. কমের। তিনি অভিযোগ করেন, আমার মা বেঁচে থাকা অবস্থায় প্রাপ্ত সম্মান পায়নি। তিনি অনেক কষ্টে ছিলেন, আমাদের অনেক অর্থকষ্টে বড় করেছেন। ইচ্ছে ছিল বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করার।

তিনি  আরও বলেন, আমার মা প্রধানমন্ত্রীকে অনেক কিছু বলতে না পেরে আমাদের বলে গেছেন। আমরা একটিবারের জন্য হলেও প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই।

মায়ের আত্মার শান্তির জন্য স্মৃতিবিজড়িত চোরাগী মোড়ে একটি প্রতিকৃতির অনুরোধ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ( চসিকের) কাছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর