হাজারো কাজের ব্যস্ততা যেন উঁকি দিচ্ছে এখন থেকেই। যে কোন উপলক্ষ্য আয়োজন মানেই বাড়তি ব্যস্ততা। আর সেই উপলক্ষ্য যদি হয় কোরবানির ঈদ তবে যেন ষোল আনাই পূর্ণ হয়।
সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা থাকে কোরবানি পশুর মাংস সঠিকভাবে ভাগ করা, আত্মীয়-পরিজনদের মাঝে বন্টন করা ও নিজেদের জন্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে। সকালে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে শুরু হয় ব্যস্ততার পালা। পালাক্রমে চলতে থাকে একের পর এক কাজ।
খুব সাধারণভাবেই কোরবানির ঈদের প্রস্তুতিতে অন্যান্য সকল কিছুর পাশাপাশি কোরবানি সংক্রান্ত ব্যস্ততা থাকে সবচাইতে বেশি। হাতে দু’দিন থাকতে কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস গুছিয়ে রাখলে কাজ করতে সুবিধা হবে অনেকটা।
এক নজরে দেখে নিন কোন সরঞ্জাম ও সামগ্রীগুলো গুছিয়ে রাখা জরুরি।
আরো পড়ুন: কীভাবে স্বল্প স্থানে পর্যাপ্ত মাংস সংরক্ষণ করবেন?
ঘরে ভালো কাঠের গুঁড়ি আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন। যদি বেশি দিনের পুরনো হয়ে যায় কিংবা কাঠের গুঁড়ির জায়গায় জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়া থাকে তবে নতুন কিনে ফেলুন।
মাংস সঠিক মাপমতো কাটার জন্য বটি, ছুরি ও দা ধার করিয়ে রাখুন। নইলে মাংস কাটাকুটিতে ঝামেলা পোহাতে হবে। তবে ধার করানোর সময় খেয়াল রাখবেন, অতিরিক্ত ধারালো যেন না হয়। এতে কাট কেটে যাবার সম্ভবনা থাকে।
কোরবানির ঈদের দিন ছোট কিংবা বড় দুর্ঘটনা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। কারণ বটি ও ছুরির কাজ তুলনামূলক বেশি থাকে। এছাড়া কোরবানির পশুর হাড়ের খোঁচা থেকেও হাত কেটেছড়ে যায়। তখন দ্রুত জীবাণুনাশক উপাদান যেমন ডেটল কিংবা স্যাভলন ব্যবহার করতে হবে। ঘরে যদি ডেটল শেষ হয়ে যায়, তবে ছোট একটি বোতল কিনে রাখুন।
কোরবানি পরবর্তি সময়ে ও মাংস রাখার জন্য চাঁটাই প্রয়োজন হবেই। যেহেতু পুরো বছরে জিনিসটি প্রয়োজন হয় না, অনেকেরই হয়তো খেয়াল থাকবে না চাঁটাই কেনার কথা।
মফঃস্বল এলাকার দিকে অনেকের বাড়িতেই নিজস্ব দাঁড়িপাল্লা থাকে। শহুরে এলাকার বাসাতে দাঁড়িপাল্লা না থাকাটাই স্বাভাবিক। কশাই পুরো কোরবানির মাংস পরিমাপ করে দিলে বন্টনের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে নিজেরও মাংস পরিমাপ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে ডিজিটাল দাঁড়িপাল্লা কিনে ফেলতে পারেন। অথবা বাসার পাশের কোন মুদি দোকান থেকেও ভাড়া আনতে পারেন কয়েক ঘন্টার জন্য।
মাংস বন্টন ও সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন মাপের পলিথিন ব্যাগের প্রয়োজন হবে। ঈদের দিন কিনবেন ভাবলে ভুল করবেন। প্রথমত ঈদের দিন বেশীরভাগ মুদি দোকান বন্ধ থাকে। দ্বিতীয়ত, কিছু মুদি দোকান খোলা থাকলেও বাড়তি চাহিদার মুখে পলিথিন ব্যাগ পাওয়া দুষ্কর হয়ে যায়। দু’দিন হাতে থাকতেই ছোট ও বড় কয়েকটি মাপের পলিথিন কিনে ফেলুন।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্লিচিং পাউডার আবশ্যক। রক্ত, ময়লা ও জীবাণু দূর করার জন্য ব্লিচিং পাউডার ব্যবহারের বিকল্প নেই। কোরবানি ও কোরবানির কাজ শেষে বাসার নিচের অংশ ও বাসা সংলগ্ন রাস্তায় ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিতে হবে। এছাড়া ঘর, বারান্দা ও রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতাতেও ব্লিচিং পাউডার প্রয়োজন হবে।
আরো পড়ুন: মশলার জোগাড়, দেরি নয় আর
বাসার নিচের অংশ, ঘর, রান্নাঘর ও বারান্দার অংশ পরিষ্কারের জন্য ছোট একটি শলার ঝাড়ু ক্লিনে ফেলুন। গরম পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ঝাড়ুর সাহায্যে পরিষ্কার করলে দ্রুত রক্ত ময়লা দূর করা সম্ভব হবে।
কোরবানির পশুর মাংস, হাড়, চর্বি, ভুঁড়ি, কলিজা ও মাথা আনা-নেওয়া ও ধারণের জন্য বড় আকারের পাত্রের প্রয়োজন হবে। প্রয়োজনের সময় দেখা যায় যথেষ্ট বড় কোন পাত্র পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এখনই সংগ্রহ করে ফেলুন বড় আকারে পাতিল কিংবা গামলা।
এই জিনিসটার কথা হয়তো অনেকে একেবারেই ভুলে যাবেন। কিন্তু ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে চুন প্রয়োজন হবেই। অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সময় এক কৌটা চুনও কিনে ফেলুন খেয়াল করে।