যেভাবে মোকাবিলা করবেন ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’

পরামর্শ, লাইফস্টাইল

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল | 2023-08-27 17:28:55

দ্রুততার সঙ্গে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।

এতে করে বাংলাদেশের উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিমাংশ উপকূলীয় অঞ্চলগুলো ক্ষতিগ্রস্তের মুখে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বন্দর থেকে লঞ্চ ও জাহাজ চলাচল। এছাড়া চট্টগ্রামে ছয় নাম্বার বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রয়োজন পূর্ব প্রস্তুতি ও সচেতনতা। আকস্মিক এমন বিপর্যয়ে স্বাভাবিকভাবেই দিশেহারা হয়ে যান সকলে। কীভাবে মোকাবিলা করবেন এবং কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং কী করলে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে এই ঘূর্ণিঝড়ে, সেটাই সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছে আজকের বিশেষ ফিচারে।

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগের প্রস্তুতি

১. বাসার সকল দরজা-জানালার লক ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে। প্রয়োজনে লক ঠিক করতে হবে অথবা নতুন লক লাগিয়ে নিতে হবে।

২. বাসার কোথাও কোন ধরনের ফাটল বা চিড় আছে কিনা দেখতে হবে, এবং টিনের ছাদ হলে ছাদে উঠে দেখতে হবে ছাদের অংশে কোন সমস্যা রয়েছে কিনা। যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে দ্রুত মেরামত করতে হবে। নতুবা ঝড়ে বাড়ির দুর্বল অংশের কারণে ঘরের উপরে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়।

৩. এ সময়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে। তাই ঘরে হারিকেনের কেরোসিন তেল, মোমবাতি রাখতে হবে। যেন দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকলেও কোন সমস্যা না হয়।

সংগ্রহে রাখতে হবে মোমবাতি। 

 

৪. বিদ্যুৎ এর বিষয়ে যেহেতু সংশয় থাকছে, তাই মোবাইল, ল্যাপটপ, পাওয়ার ব্যাংক, চার্জার লাইট-ফ্যান আগে থেকেই ফুল চার্জ দিয়ে রাখুন। প্রয়োজনের সময়ে যেন সমস্যায় না পড়তে হয় সে কারণে।

৫. এবারের ঘূর্ণিঝড়ের আকার ও বেগ তুলনামূলক বেশ বড়। সেক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে কিছু এলাকার মানুষকে ঘরবন্দি অবস্থায় পড়ে যেতে হতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য স্থানের মানুষেরাও প্রবল বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতের সম্মুখীন হতে পারেন। তাই ঘরে আগে থেকেই শুকনো খাবার ও সুপেয় পানি সংগ্রহ করে রাখা প্রয়োজন। এতে করে খাদ্য সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে।

৬. জরুরি কাগজপত্র আলমারি বা টেবিলের ড্রয়ারে থাকলেও ওয়াটারপ্রুফ ফাইলে সংরক্ষের ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখতে হবে ওয়াটারপ্রুফ ফাইলে।

 

৭. বাসার শিশুদের সাথে কথা বলতে হবে, ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে তাদের ধারণা দিতে হবে। শিশুরা সাধারণত ঝড়-বৃষ্টি ভয় পেয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে তারা যেন ভীত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৮. যেকোন সমস্যার জন্য ঘরে ফার্স্ট এইড বক্স তৈরি রাখতে হবে। নিত্যদিনের ওষুধ, জরুরি ওষুধ, ডেটল, ব্যান্ডেজ প্রভৃতি সংগ্রহে রাখতে হবে।

৯. টিভি কিংবা রেডিও খবরে প্রতি মুহূর্তের আপডেট শুনতে হবে এবং সেই মতো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে করণীয়

১. প্রথমেই ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে এবং ইলেকট্রনিক পণ্য সুইচড অফ করে দিতে হবে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য বজ্রপাতে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

২. গ্যাস লাইন বন্ধ রাখতে হবে।

বন্ধ রাখতে হবে গ্যাস লাইন।

 

৩. বাইরে বিদ্যুৎ চমকানোর সময় পানি ও পানিযুক্ত স্থানের আশেপাশে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. ঝড়ের সময় দাহ্য জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫. ঘরের ও ঘরের আশেপাশের যেকোন ধরনের লোহা ও স্টিলের জিনিসপত্র স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৬. বাইরে থাকাকালীন অবস্থায় ঝড় শুরু হলে যতসম্ভব দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে এবং বজ্রাপাতের সময় দ্রুত মাটিতে শুয়ে পড়তে হবে।

৭. ঝড়ের মাঝে কোন অবস্থাতেই জলাশয় তথা পুকুর, খাল, নদীতে অবস্থান করা যাবে না।

৮. বাইরে খোলা ও উঁচু কোনো স্থানে অবস্থান করা যাবে না এবং সম্পূর্ণ উন্মুক্ত স্থানে খোলা ছাতা ব্যবহার করা যাবে না।

এছাড়া যেকোনো ধরনের জরুরি প্রয়োজনে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর