অদ্ভুতুড়ে ‘ডিসগাস্টিং ফুড মিউজিয়াম’

বিবিধ, লাইফস্টাইল

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল | 2023-08-26 07:59:42

মজাদার, সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় খাবারের জন্য আয়োজন ও রেস্টুরেন্টের অভাব নেই। কিন্তু অরুচিকর খাবারের জন্য আস্ত একটি জাদুঘর বানিয়ে ফেলার মতো পাগলামী কেউ করবে, এটা হয়তো অনেকে ভাবতেই পারেন না।

অবাস্তব এমন ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৮০টি অরুচিকর খাবার নিয়ে সম্প্রতি সুইডেনে চালু হয়েছে ডিসগাস্টিং ফুড মিউজিয়াম। খাবারগুলো কতটা ‘ডিসগাস্টিং’ সেটা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়া যাক।

এখানে পাওয়া যাবে স্কটল্যান্ডের জাতীয় খাবার। যে খাবারটি কোন একটি প্রাণীর পাকস্থলীর ভেতর ভেড়ার হার্ট, লিভার ও ফুসফুস দিয়ে তৈরি করা হয়। খাবার তৈরির বর্ণনা পড়েই নিশ্চয় বিরক্তিতে নাক কুঁচকে ফেলছেন। অথচ উক্ত দেশে এই খাবারটি খুবই লোভনীয় একটি খাবার!

জাদুঘরে আরও পাওয়া যাবে টমেটো জুসের ভেতর ষাঁড়ের চোখের একটি পদ। এই খাবারটি মঙ্গোলিয়াতে মাথাব্যথার প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়া হয়। রয়েছে চীনের শত বর্ষের ‘সেঞ্চুরি এগ’, জাপানের ব্যাকটেরিয়া ফার্মেন্টেড সয়াবিন ‘ন্যাটো’ ও গ্রিনল্যান্ডের বিড়ালের মলের ‘কোপি লুয়াক’ কফি। বর্ণনা শুনে অবাক হলেও, বিভিন্ন দেশে খুবই প্রচলিত এবং ঐতিহাসিক এই সকল খাবার।

জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা স্যামুয়েল ওয়েস্ট বলেন, 'খাবারে রুচির বিষয়টি নির্ভর করে। মাকড়শা খাওয়ার কথা শুনে অনেকের ক্ষুধা পাবে, আবার অনেকেই বমিবোধ করবে। এটা পুরোটাই নির্ভরশীল। খাবারে রুচি ও অরুচির বিষয়টি সংস্কৃতির উপরে নির্ভর করে অনেকখানি। সে খাবারটি খেতে পছন্দ করি যেটা আমরা ছোটবেলা থেকে খেয়ে বড় হয়েছি'।

তিনি আরও জানান, খাবারে অরুচির বিষয়টি সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, 'দুইশত বছর আগে গলদা চিংড়ি খাওয়াটাকে এতোটাই অরুচিকর বিষয় ধরা হতো যে, এটা শুধু জেলবন্দী ও দাসদের খাদ্য ছিল। অথচ বর্তমান সময়ে এটা অন্যতম মার্জিত ও রুচিকর খাবার হিসেবে দেখা হয়'।

ওয়েস্ট নিজের গল্প বলার মাঝে আরও জানান, সুইডেনে প্রথম আসার পর সেখানের জনপ্রিয় নোনতা খাবার লিকোরিস (Licorice) খেতে তিনি খুবই অপছন্দ করতেন। কিন্তু এখন তিনি এই খাবারটি খেতে ভালোবাসেন।

মানুষের ছয়টি অনুভুতির মাঝে খাবার নিয়ে বিরক্ত হওয়া কিংবা খাবারে অরুচি আসাটা অন্যতম। অথচ মানুষ এই অনুভূতি অনুভব করতেও পছন্দ করে। বিষয়টি বোঝানোর জন্য ওয়েস্ট ব্যাখ্যা করেন, 'মানুষ নিরাপদে ভয়কে খব কাছ থেকে অনুভব করার জন্য রোলার কোস্টারে রাইড নেয়। নিরাপত্তার সঙ্গে ভয়ের অভিজ্ঞতা পেতে মানুষ খুব পছন্দ করে। ঠিক একইভাবে মানুষ অরুচিকর খাবার থেকে দূরে থাকতে চায়, যেমন কোন রোগ না হয়। যে কারণে খাবারের বিষয়ে আমাদের অরুচির বিষয়টি নানাভাবেই জীবনের উপর প্রভাব ফেলে থাকে'।

জাদুঘরটিতে প্রদর্শিত হওয়া বেশিরভাগ খাবারই সত্যিকারের খাবার। সাথে রয়েছে রেপ্লিকা ও ভিডিওতে প্রদর্শিত কিছু খাবার। সত্যিকারের কিছু খাবারের গন্ধও নেওয়া যাবে যেমন: ডুরিয়ান। থাইল্যান্ডের এই ফলটিকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গন্ধযুক্ত ফল।

আরও পড়ুন: দশ দেশের দশ ‘ঐতিহ্যবাহী’ খাবার

আরও পড়ুন: কাঁধের হাড় ও পেশী দিয়ে তৈরি যে নারীর মুখমণ্ডল!

এ সম্পর্কিত আরও খবর