মুক্তিযোদ্ধা সোবহান হত্যা মামলায় ৯ জনের যাবজ্জীবন বহাল

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-21 12:19:26

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চাঞ্চল্যকর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ৯ আসামির সাজার রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্টে। সাজার বিরুদ্ধে আসামিদের করা জেল আপিল খারিজ করে চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিচারিক আদালতের যাবজ্জীবন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় দেন।

যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকা ৯ আসামি হলেন- আইয়ুব আলী, মো. এরশাদুর রহমান, শহীদুল ইসলাম খোকন, মো. ইলিয়াস, মো. বকতিয়ার, শামসুল ইসলাম ওরফে শামসু, আবুল হাসেম, নজরুল ইসলাম ওরফে নজু ও মো. ইব্রাহিম। কারাগারে থাকা অবস্থায় দণ্ডিত এসব আসামি জেল আপিল করেন। পরে তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন। হাইকোর্ট এদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ এ এন এম বশির উল্লাহ ২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান হত্যা মামলায় ২১ আসামির মধ্যে ১৭ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। বাকি চারজনের মধ্যে দুইজন মৃত। এছাড়া খালাস পান দুইজন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ৯ আসামি জেল আপিল করেন হাইকোর্টে। পলাতক থাকায় বাকি আটজন আপিল করেননি।

আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, মো. খুরশীদ আলম খান, ফখরুল ইসলাম, মাহবুবা হক, মো. রফিকুল ইসলাম মিয়া, তপন কুমার দে, শংকর প্রসাদ দে ও মোসাব্বির হোসেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম, মো. আশিক মোমিন ও মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গাজী মামুনুর রশিদ, মো. আব্বাস উদ্দিন, আনিসুর রহমান ও মো. কাজী ইলিয়াস উর রহমান।

১৯৯১ সালের ৩০ অক্টোবর স্থানীয় রানীরহাট বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে সোনারগাঁও পৌঁছলে আইয়ুব বাহিনীর সদস্যরা আবদুস সোবহানকে অপহরণ করে স্থানীয় পাহাড়ের জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তাকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে নিহতের ছেলে বখতিয়ার আহমেদ হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিহতের দুই ছেলে কবির আহমেদ ও সবুর আহমেদকে এসিড নিক্ষেপ করে এ মামলার আসামিরা। ১৯৯২ সালের ৩ মার্চ পুলিশের উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

নিহত আবদুস সোবহানের বড় ছেলে ডা. উকিল আহমেদ তালুকদার (সেলিম) বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'আমার দুই ভাইকে এসিড মারার প্রতিবাদ করায় বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।'

তিনি হাইকোর্টের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, 'দীর্ঘ ২৮ বছর পর উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে আমি খুশি। আশা করি সুপ্রিম কোর্টের এ রায় বহাল থাকবে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর