ধর্মীয় বর্ণ প্রথায় বিপাকে দম্পতি

, আইন-আদালত

নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-30 17:05:00

ভালোবেসে বিয়ে করে বিপাকে পড়েছেন তুষার দাস ও সুষ্মিতা দেবনাথ অদিতি দম্পতি। হরিজন বর্ণের তুষারের সাথে সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি ব্রাহ্মণ অদিতির পরিবার। ভালোবেসে গাঁটছড়া বাধার পরেও তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা ঠুকেছেন অদিতির মা।

এর মধ্যে অদিতির কোল জুড়ে এসেছে এক মেয়ে। এদিকে মামলায় ১৪ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। দন্ডিত হয়ে তুষার ২৮ দিন ধরে কারাগারে। তাকে কারামুক্ত করতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অদিতি।

তুষারের বিরুদ্ধে অদিতির মায়ের করা অপহরণ ও মামলায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ আবদুস ছালাম খান। অদিতিকে ভালবেসে বিয়ের করার বিষয়টিকে আমলেই নেননি বিচারিক আদালত।

রায়ে আদালত বলেছেন, ‘আসামি তুষার দাস ওরফে রাজ সুষ্মিতা দেবনাথ ওরফে অদিতিকে অপহরণ করে নিয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আসামি শিশু সুষ্মিতাকে বিয়ে করবেন এই আশ্বাস দিয়ে এই অপহরণ করেছেন। যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হলো।’

তবে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর গত ৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত কারাগারে পাঠান তুষারকে। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন তুষার। সেখান থেকে তিনি আপিল করেন।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) তুষারের করা আপিলের শুনানি শুরু হবে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে। আদালতে তুষারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিবেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার সঙ্গে আছেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন।

আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মানবিক কারণে মামলাটি লড়তে যাচ্ছি। বিচারিক আদালতের ১৪ বছরের সাজা সঠিক হয়নি। আশা করি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবে ভুক্তভোগী এ দম্পতি।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত বলেছেন, ‘হিন্দু ধর্মে অসম বর্ণের মধ্যে বিয়েতে আইনগত বাধা নেই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর