গুঁড়া দুধ যেন অনিরাপদ না হয়: হাইকোর্ট

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-26 06:16:13

দেশের বাজারে গুঁড়াদুধের মান ঠিক রাখতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইকে খেয়াল রাখতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  আদালত বলেছেন, আমরা চাই গুঁড়া দুধ যেন অনিরাপদ না হয়। বিদেশী গুঁড়া দুধ যেন দেশীয় বাজার দখল না করে। দেশীয় কোম্পানি ও খামারিরা ভাল থাকুক। তবে দুধ উৎপাদনের মান ঠিক রাখতে হবে।

সোমবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

শুনানিতে বিএসটিআইয়ের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান দুধের মান তদারকি করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি বা কমিশন গঠন করা যেতে পারে বলে মত দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুধ নিয়ে গবেষণা করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুককে হুমকি দিয়েছে কোম্পানিগুলো। তারা লিগ্যাল নোটিশও দিয়েছে বলে আদালতের নজরে আনেন।

পরে আদালত আগামী ২০ অক্টোবর আদেশের দিন নির্ধারণ করেন।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআই আদালতে জমা দেওয়া কোন নথি  তাকে দেয়নি।

আদালতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম তাদের পদক্ষেপের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।

গত ১৬ জুলাই পশু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গবাদি পশুকে কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী ক্ষতিকারক উপাদান থাকা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে জানাতে বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় শুনানির জন্য বিষয়টি কার্যতালিকায় আসে।  

প্রসঙ্গত রোববার হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ দেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) অনুমোদিত আড়ং, প্রাণ ও ফার্ম ফ্রেশসহ ১৪ ব্যান্ডের পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন ও বিপণন পাঁচ সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।  পাশাপাশি পাস্তুরিত দুধ কেনা ও বিক্রিতে সতর্ক থাকতে বলেন। এ ১৪ ব্যান্ডের উৎপাদিত দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতির অ্যান্টিবায়োটিক ও ধাতব উপাদানের (সীসা) উপস্থিতি থাকায় আদালত এ নিষেধাজ্ঞা দেন।

১৪টি ব্যান্ড হলো-আফতাব মিল্ক এন্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেডের ‘আফতাব’, আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেডে ‘ফার্ম ফ্রেশ মিল্ক’, আমেরিকান ডেউরি লিমিটেডের ‘মো’, বাংলাদেশ মিল্ক প্রোডিউসার কো অপারেটিভ ইউনিয়ন লিমিটেডের ‘মিল্ক ভিটা’, বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্ক এন্ড ফুডস লিমিটেডের ‘ডেইরি ফ্রেশ’, ব্র্যাক ডেউরি এন্ড ফুড প্রোডাক্টেও ‘আড়ং ডেইরি’, ডেনিশ ডেউরি ফার্ম লিমিটেডের ‘আয়রান’, ইছামতি ডেউরি ফার্ম এন্ড ফুড প্রোডাক্টসের ‘পিউরা’, ঈগলু ডেউরি লিমিটেডের ‘ঈগলু; , প্রাণ ডেউরি লিমিটেডের ‘প্রাণ মিল্ক’, উত্তরবঙ্গ ডেউরি লিমিটেডের ‘মিল্ক ফ্রেশ’, শিলাইদাহ ডেউরির ‘আল্ট্রা’, পূর্ববাংলা ডেউরি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং তানিয়া ডেউরি এন্ড ফুড প্রোডাক্টসের ‘তানিয়া’। 

আদালতের নির্দেশে চারটি গবেষণা প্রতিবেদনের পর শুনানি শেষে রোববার (২৮ জুলাই) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর