নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেন হুমায়ুন আজাদ হত্যায় অভিযুক্তরা

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 04:39:25

প্রথাবিরোধী লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।

সোমবার (৬ মে) ঢাকার মামলাটি ঢাকার চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদা পারভীনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় তারা এ দাবি করেন।

নির্দোষ দাবি করা আসামিরা হলেন- জেএমবির সুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক ও আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ।

অপর তিন আসামি জেএমবির সুরা সদস্য নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবু, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও হাফিজ মাহমুদ পলাতক আছেন।

আগামি ২৭ জুন যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এ হত্যা মামলায় ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে ৪১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহফুজুর রহমান জানান, আত্মপক্ষ সমর্থন করে কারাগারে থাকা দুই আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। বিচারক যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য করেছেন। যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হবে।

২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পাঁচ জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. হাবিবুর রহমান।

তার আগে ওই বছরের ৩০ এপ্রিল সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিট দাখিলের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের আট বছর তিন মাস পর ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার তদন্তের বেড়াজাল ছিঁড়ে বিচার শুরু হওয়ার পথ সুগম হয়।

হত্যার অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ পাঁচজনের নাম মামলার চার্জশিট থেকেই বাদ দেওয়া হয়।

এ মামলায় চার্জশিট দেওয়ার আগেই অন্য একটি মামলায় ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় আসামি শায়খ আব্দুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, আব্দুল আওয়াল, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই ও খালেদ সাইফুল্লাহর নামও চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ ঝালকাঠির এক বিচারক হত্যা মামলায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

অভিযোগ প্রমাণ হলেও চার্জশিট দাখিলের আগেই মারা যান জনৈক নুরুল্লাহ ওরফে হাফিজ। ফলে তার নামও মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন হুমায়ুন আজাদ।

এ সময় তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মাথায়, মুখে ও ঘাড়ের ওপর জখম করা হয়। ঘটনার পরদিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর জেএমবি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, নুর মোহাম্মাদ সাবু ওরফে শামীম, মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার ওরফে ভাগ্নে শহিদকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছিল পুলিশ।

সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে হুমায়ুন আজাদের ভাই ও এই মামলার বাদী মো. মঞ্জুর কবির ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর মামলাটির বর্ধিত তদন্তের আবেদন করলে ২০ অক্টোবর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হামলার শিকার হওয়ার পর ২২ দিন সিএমএইচ হাসপাতালে এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসারত ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে ২০০৪ সালের ৭ আগস্ট জার্মানি যান তিনি। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট ড. হুমায়ুন আজাদ জার্মানির মিউনিকে মারা যান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর