দলের নেতাদের দুর্নীতি দমনে চূড়ান্ত কঠোর হচ্ছেন মমতা

, কলকাতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলকাতা | 2023-08-30 03:40:06

একদম চাঁচাছোলা ভাষায় দলের পুর প্রতিনিধিদের বৈঠকে দুর্নীতি দমনের নির্দেশ দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু নির্দেশ নয়, তা অমান্য করলে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিলেন তিনি।

মঙ্গলবার(১৮ জুন) দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে রাজ্যের সমস্ত পুরসভার নির্বাচিত দলীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনে কম ভোট পাওয়ার জন্য ভোট যন্ত্র ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগ তুললেও দলের অন্দরের শুদ্ধিকরণে জোর দিয়েছেন মমতা।

তিনি পরিষ্কার বলেন, 'কমিশন খাওয়া চোরদের আমি দলে রাখব না।'

লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর থেকেই সাংগঠনিক স্তরে কড়া মনোভাব নিয়ে চলেছেন মমতা। রাজ্যের ১২৭টি পুরসভা ও পুর নিগমের মধ্যে সিংহভাগ অঞ্চলে বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। মমতার দাবি, সংসদীয় আসন সংখ্যা কমলেও মোট প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে প্রায় পাঁচ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে তৃণমূলের। তাছাড়া ৩০০-এর মতো ইভিএম ‘সেটিং’ করা হয়েছিল। তাই এই ফল দেখে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই।

তার মতে, এটা ‘চিটিংবাজির ভোট’। তবুও দলের কর্মীদের একাংশের আচরণ ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে এদিন ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। রাজ্যের উন্নয়নমূলক নানা সামাজিক ও আর্থিক প্রকল্পে তৃণমূল জমানায় ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন মমতা। সেই উন্নয়নের ফল সব ক্ষেত্রে সমান পাওয়া যায়নি। এই নিয়ে নির্বাচনী ফলাফলের পর্যালোচনায় দলের কোর কমিটির বৈঠকেই প্রথম সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

তিনি দলীয় পুর প্রতিনিধিদের সামনে ছিলেন রুদ্রমূর্তিতে। তার দাবি, নানা প্রকল্পে উপেভোক্তাদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া হয়েছে। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের রুপি পাইয়ে দিয়ে ২৫ শতাংশ কমিশন নেওয়া হয়েছে। এমনকি কন্যাশ্রী, সমব্যথীর মতো প্রকল্পেও রুপী নেওয়া হয়েছে। সমব্যথী প্রকল্পে দুই হাজার রুপি দেওয়া হয়। সেখানেও ২০০ রুপি কমিশন দিতে হয়েছে বলে তার কাছে খবর রয়েছে। মমতার ঘোষণা, এসব আর বরদাস্ত করা হবে না। তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

যদিও মমতার মতে, যারা রুপি নিয়ে ধরা পড়ছে, তারা অন্য দলে চলে যাচ্ছে। অন্য দল বলতে মমতা বিজেপির দিকেই ইঙ্গিত করেন। তার পরিষ্কার বক্তব্য, যারা দলে থাকতে চান,তাদের অবিলম্বে কাটমানির রুপি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'আপনাদের কোনো অধিকার নেই রুপি নেওয়ার। রাজনৈতিক মহল মনে করছে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানের ক্ষেত্রে দলের নিচু তলার নেতাদের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া বড় ফ্যাক্টর বলে মনে করছেন মমতা। সেই কারণেই তিনি দুর্নীতির ক্ষেত্রে ক্রমশ কড়া অবস্থান নিচ্ছেন।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর