ফণীতেও থামেনি কলকাতায় থাকা বাংলাদেশিদের শপিং

, কলকাতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 03:58:15

ফণীর দংশনে বিপর্যস্ত জনজীবন। ঝড়ো বৃষ্টিতে রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলো বিপর্যস্ত। ইতোমধ্যেই লণ্ডভণ্ড হয়েছে কলকাতার পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশা। এবার পশ্চিমবাংলার পালা। রাতেই শুরু হতে পারে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাতে কলকাতার বুকে ছোবল বসাতে পারে ফণী।

হাতে অনেক সময়! তাই হোটেল রুমে আটকে নেই কলকাতায় অবস্থানরত বাংলাদেশি পর্যটকরা। দিব্যি মজে আছেন শপিং-এ। সামনে রোজা, বৃষ্টি নামার আগে শেষ করতেই হবে শপিং। শনিবার (৪ মে) অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। তাই কেনাকাটা একপ্রকার হবেই না, তাই শেষ করার তাড়া। এমনই চিত্র দেখা গেল কলকাতার নিউমার্কেট চত্বরে।

শুক্রবার (৩ মে) কলকাতার পার্ক স্ট্রিট, মির্জা গালিব স্ট্রিট, সদর স্ট্রিটের হোটেলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল হোটেলগুলির প্রায় সব ঘর ভর্তি। যাকে বলে হাউসফুল।

চিকিৎসার থেকেও এ মুহূর্তে উৎসবের মরসুমের আগে কলকাতায় কেনাকাটা সারতে এসেছেন বাংলাদেশিরা। অনেক মানুষ এসেছেন ব্যবসার কারণে। কিন্তু হঠাৎ এসে যাওয়া ফণীর কারণে তারা কিছুটা বিভ্রান্ত।

যদিও ইতোমধ্যেই কলকাতায় সংবাদ সম্প্রচার হচ্ছে, ঝোড়ো হাওয়ার দাপট থাকলেও ভয়ংকর কিছু প্রভাব ফেলবে না ফণী। তবুও শপিং-এ ব্যস্ত বাংলাদেশিরা খোঁজ রাখছে বিষয়টির ওপর। কলকাতার পাশাপাশি খবর নিচ্ছে রাজশাহী, খুলনা, যশোর সহ বিভিন্ন জেলার।

রাজশাহী থেকে এসেছেন ফারুক বিশ্বাস, স্ত্রীর চিকিৎসার পর ঘুরে দেখার পরিকল্পনা ছিল কলকাতা। ফণীর কারণে তা স্থগিত, হাতের কাজ বলতে শপিং, তাই শেষ করতে ব্যস্ত। শুধু ফারুক কেনো, ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন জাকিয়া। প্যাল্ন ঈদ শপিং, বৃহস্পতিবারের খবর আর সকালের বৃষ্টি মনমরা করেছিল তাদের। ৫ তারিখ ফিরবে কিন্তু কি করে শেষ করবে কেনাকাটা?

আশার আলো কলকাতার দোকানপাট সব খোলা। তাই একটু বৃষ্টি ধরতেই আজই শেষ করবে কেনাকাটা। কারণ শনিবার (৪ মে) যদি ভারী বৃষ্টি হয়? কিছুতেই হবে না রোববার বাড়ি ফেরা।

তাই জাকিয়াদের মত অনেক বাংলাদেশি সময় নষ্ট না করে তারা সদলবলে কেনাকটি করতে বেরিয়ে পরেছেন। সাথে বাড়তি সুবিধা, পথে আজ অনেকটাই কম কলকাতার স্থানীয়রা।

নিত্যদিনের মত খোলা কলকাতার নিউমার্কেট। এ সময় তাদের পুরোপুরি ব্যবসা চলে বাংলাদেশিদের নিয়ে, আবার রোজার দিনগুলো শেষ হতে তখন ভিড় বাড়ে কলকাতার ক্রেতাদের।

তবে নিউমার্কেটের ভিতরের দোকানগুলো খোলা থাকলেও খোলা আকাশের নিচে বসা ফুটপাতের দোকানগুলো শুক্রবার দেখা যায়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। আকাশ মেঘলা থাকায় ভ্যাপসা গরম নেই। সঙ্গে চলছে ঠাণ্ডা হাওয়া।

দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সকালের দিকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থামতেই শুরু হয়েছে ক্রেতাদের আগমন।

প্রশাসনিক খবর অনুযায়ী। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কলকাতায় আবার শুরু হতে পারে ঝড় বৃষ্টি। তার আগে সকলকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেবার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আতঙ্ক কিছুটা থাকলেও কেনাকাটার সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজি নন বাংলাদেশিরা। সন্ধ্যার পর থেকে কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রবল বেগে ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর, রাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

মেদিনীপুর জেলার দীঘা, মন্দারমনি, শঙ্করপুর সহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকায় জারি হয়েছে সর্তকতা। পর্যটকশূন্য সমুদ্র সৈকত, পানির স্তর ৫ মিটার বাড়বে বলে আশঙ্কা। রাজ্যে তাণ্ডবের পর শনিবার পথ পরিবর্তন করে ফণী যাবে বাংলাদেশের দিকে।

তাই হাতে এখন কয়েক ঘণ্টা সময়। সময় নষ্ট করছে না তারাও। নিরাপদেই আছেন কলকাতায় অবস্থানরত বাংলাদেশিরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর