ঘরোয়া ভাবে আয়ুর্বেদিক বার্তা দিল ভারতের কেন্দ্রীয় আয়ূশ বিভাগ

, কলকাতা

কলকাতা ডেস্ক | 2023-08-30 05:31:13

সুগার! নিয়ন্ত্রণে খালি পেটে একসাথে তিন থেকে পাঁচটি করলার রস খান। অথবা ঈষদুষ্ণ পানিতে ত্রিফলারগুড়ো ভিজিয়ে দিনে দুবার খেলেও ভালো ফল পেতে পারেন। ব্লাড প্রেসার! নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন, এককোয়া রসুন খেলেও ভালো কাজ দেবে। ব্যথা-বেদনায় কষ্ট পাচ্ছেন! এক গ্লাস গরম দুধে এক চা চামচ হলুদগুঁড়ো দিনে একবার রোজ খাওয়া যেতে পারে।

সুগার, প্রেসার, ব্যথার মতো চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেওয়া অসুখবিসুখে এমনই ঘরোয়া আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার নিদান দিল ভরেতের কেন্দ্রীয় আয়ূশ মন্ত্রক ও পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য দপ্তরের আয়ূশ শাখা। জ্বর, কাশি, ঠান্ডা লাগা, ক্ষুধামান্দ্য, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া সহ মাঝেমধ্যেই দুশ্চিন্তায় ফেলা রোজকার রোগভোগকে আয়ত্তে রাখার বার্তাও দিয়েছে ‘আয়ুর্বেদিক অ্যাডভোকেসি ফর হেলথ প্রোমোশন স্পেশাল থ্রু আয়ূশ কিট অ্যান্ড ইটস ইউস’ নামের এই যৌথ পুস্তিকা।

সুগার নিয়ন্ত্রণে করলা, ত্রিফলা ছাড়াও আরও কী কী ঘরোয়া টোটকার কথা বলা হয়েছে? সেখানে বলা হয়েছে মেথির কথাও। চার চামচ মেথি এক গ্লাস পানিতে রাতে ভিজিয়ে সকালে খেতে বলা হয়েছে। এক থেকে তিন চামচ হলুদ গুঁড়ো ঈষদুষ্ণ পানিতে মিশিয়ে দিনে দুবার খেলে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, দেওয়া হয়েছে এই নিদানও। খুক খুক করে কাশছেন? বলা হয়েছে, আদা টুকরো টুকরো করে কেটে পানিতে ফোটান। পানি একটু ঠান্ডা হলে পান করুন।

বছরভর ঠান্ডা লাগলে কী করতে হবে? হারবাল টি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আদা, গোলমরিচ এবং তুলসীপাতা দিয়ে তৈরি করতে হবে সেই হারবাল টি। পাঁচ থেকে ছটি লবঙ্গ ও রসুনের কোয়াও কাজে দিতে পারে। নাক বন্ধ থাকলে জোয়ানের ঝাঁঝ কষ্ট দূর করতে পারে। জ্বরজারিতে এক চামচ করে আদার রস, মধু ও তুলসীপাতার রস মিশিয়ে দিনে চারবার খেলে আরাম মিলতে পারে।

ব্যথাবেদনায় এক কাপ সর্ষের তেলে ১০ গ্রামের মতো কর্পূর দিয়ে গরম করতে হবে সেই মিশ্রণ। যতক্ষণ না কর্পূর সম্পূর্ণভাবে উবে যায়। হালকা গরম সেই তেল ব্যথার জায়গায় লাগাতে বলা হয়েছে। আর একটি সমাধান হল, ৬০ মিলি নারকেল তেলে আট থেকে দশটি লবঙ্গের টুকরো ও রসুনের কোয়া দিয়ে ভাজতে বলা হয়েছে। সেই মিশ্রণ ব্যথার জায়গায় দিলেও মিলতে পারে আরাম।

খিদে কম হওয়ার সমস্যা অনেকেরই। তারও নিদান রয়েছে এই আয়ুর্বেদিক পুস্তকে। চারটি সমাধানের কথা বলা হয়েছে সেখানে। এক, লেবুর রসে আদার টুকরো ও সৈন্ধব লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে হবে। দুই, ভাতের মাড়ের সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে হবে। তিন, আমলকির গুঁড়োতে অল্প নুন মিশিয়ে খাবার আগে খেতে হবে। চার, লেবু দুটুকরো করে কেটে, তাতে নুন ও গোলমরিচ মিশিয়ে সেই লেবুর রস চুষতে হবে।

সামগ্রিকভাবে নীরোগ থাকার জীবনরহস্যের কথাও বলা হয়েছে এই বইতে। খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস এই জীবনযাপনের প্রধান নিয়ম। এরপরই আসবে খালি পেটে পানিপান ও প্রাতঃকৃত্য সম্পাদন। তারপর আসবে দাঁত মাজা ও জিভ পরিষ্কারের পালা। এরপরের ধাপে ‘ন্যাসাল মেডিকেশন’ কথা বলা হয়েছে। তাতে নাকে তেল দেওয়া বা তেজপাতা পানিতে ফুটিয়ে বাষ্প বা ভেপার নেওয়াও যেতে পারে। এরকমই একাধিক ঘরোয়া উপায়ের নিদান দেওয়া হয়েছে বইটিতে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর