গর্ভবর্তী ও দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের রোজার বিধান

, ইসলাম

মুফতি ফারহীন জান্নাত ইউসুফী, অতিথি লেখক | 2023-08-11 05:30:06

সিয়াম সাধনা। অন্তরের বিশুদ্ধতা ও শারীরিক সহিষ্ণুতার এক সাধনা। মহান রবের হুকুমে তা এক ইবাদাত। মুসলিমমাত্রই মহান মালিকের আনুগত্যে নিজেকে পূর্ণ সমর্পণ করে খুঁজে পায় অপার্থিব তৃপ্তি। তাই প্রত্যেক মুসলিম মাত্রই রোজা রাখার ক্ষেত্রে হবেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এটাই স্বাভাবিক। এটা ঈমানের দাবীও বটে।

এই প্রতিজ্ঞা অন্তরে ধারণ করেই অন্যসব মুসলিমের মতোই রোজা পালন করেন গর্ভবতী ও দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়েরাও। তাদের মধ্যে অনেকেই পুরো সুস্থ, কেউবা আংশিক অসুস্থ। তবুও কষ্ট করে আল্লাহর তরে আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে রোজা পালন করছেন। এমনকি অনেকে ডাক্তারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেও রোজা রাখছেন। রোজা পালন ও ইসলামি বিধান পরিপালনের প্রতি তাদের এই আগ্রহ ও আবেগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। নিঃসন্দেহে তারা এমন মনোভাবের জন্য আল্লাহতায়ালা কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান প্রাপ্ত হবেন।

আল্লাহর আদেশ যেমন পালন করতে দ্বিধা না থাকা উচিত, তেমনি তার দেওয়া সুযোগ গ্রহণেও কোনো সংশয় না রাখা বাঞ্চনীয়। যদি মা বা সন্তানের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা না থাকে, তবে রোজা রাখা উত্তম। আর যদি মা কিংবা সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা রোজা রাখতে খুব কষ্ট হয়, তাহলে ইসলাম সুযোগ রেখেছে রোজা না রাখার।

গর্ভবর্তী নারী ও দুগ্ধপোষ্য কোনো শিশুর মা যদি কষ্টের কারণে কিংবা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কায় রোজা না রাখেন, তবে কোনো অসুবিধে নেই। তার কোনো গোনাহ হবে না। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে সুযোগমতো সময়ে ওই রোজার কাজা আদায় করে নিতে হবে। কাফফারাও আদায় করতে হবে না।

এ সুযোগের ঘোষণা দিয়ে হজরত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মুসাফির থেকে রোজা ও অর্ধ নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন এবং গর্ভবর্তী ও দুধ পান করায় এমন মহিলাদের থেকে রোজাকে কমিয়ে দিয়েছেন।’ –তিরমিজি: ৭১৫

ইসলাম মানবতার ধর্ম। এখানে জোর-জবরদস্তির কোনো অবকাশ নেই। কোনো বিধান পালনে কষ্ট নেই। কাজেই সুস্থ অবস্থায় যেমন আল্লাহর বিধান পূর্ণ পালনে সচেষ্ট থাকা উচিত, তেমনি প্রয়োজনে সুযোগও নেওয়া উচিত। যাতে ধর্ম পালন আমাদের জন্যে বোঝা না মনে হয়। মনে প্রশ্নের উদ্রেক না হয়। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য।

এ সম্পর্কিত আরও খবর