ঈদুল ফিতর মুসলমানদের দ্বিতীয় উৎসবের দিন। সারামাস সিয়াম সাধনার পর আসমানের রবের পক্ষ থেকে পুরস্কার, ক্ষমা ও স্বীকৃতি গ্রহণ করার মহা আনন্দের দিন। তাই এ দিনের গুরুত্ব ও আদব অন্যদিনের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন।
এ দিন হলো মহান মালিকের পক্ষ থেকে তার প্রিয় বান্দাদের জন্য নিমন্ত্রণের পবিত্র দিন। তাই ইসলামি শরিয়তে এ দিনে রোজা রাখা নিষিদ্ধ। সুমহান রাজাধিরাজের নিমন্ত্রণের সম্মানার্থে এ দিনে কিছু হলেও খাওয়া ওয়াজিব। উৎসবমুখর পরিবেশে থাকা সুন্নত।
রবের আসমানি ও ক্ষমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনার্থে খোলা মাঠে সম্মিলিতভাবে দু’রাকাত নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। আর ঈদুল ফিতরের এ নামাজই হলো- এ দিবস উদযাপনের প্রধান আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি।
পরস্পরে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করাও ঈদযাপনের অংশ। যেকোনো ভাষায় ও শব্দে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ থাকলেও সাহাবা ও তাবেয়িদের থেকে যে ভাষণ বর্ণিত আছে তা-ই সর্বোত্তম। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে তাদের ভাষা ছিল এমন- ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম।’ আল্লাহ আমার ও তোমার ঈদযাপন কবুল করুন।
আরও পড়ুন:
ঈদুল ফিতরের আমলসমূহ
ঈদের দিনের সুন্নত ও মোস্তাহাবসমূহ
ঈদের নামাজের নিয়ম-কানুন ও জরুরি কিছু মাসয়ালা
এ দিনের আরও কিছু আদব হলো-মেসওয়াক করা, ভালোভাবে গোসল করা, সাধ্যের মধ্য সর্বোত্তম শালীন পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, বাসা থেকে বের হওয়ার আগে বেজোড় সংখ্যায় খেজুর খাওয়া, ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করা, পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া, ঈদগাহে আসা-যাওয়ার পথে তাকবির বলতে থাকা।
ঈদের দিন ঈদের নামাজের পূর্বে বাড়িতে বা ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া নিষেধ। আর ঈদের নামাজের পর ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া নিষেধ।
ঈদ যেহেতু একটি ধর্মীয় উৎসবের দিন সেহেতু অধর্মের কোনো কাজ ঈদের দিন কোনোভাবেই উচিৎ নয়। তাই এ দিনে পবিত্রতা, আসমানী সাধারণ ক্ষমার মর্যাদা ধরে রাখতে সকল ধরণের বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, পর নর-নারীর বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক চর্চা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা জরুরি।
ঈদের উৎসবের নামে বিকট আওয়াজে গান বাজিয়ে শব্দদূষণ সৃষ্টি করা, মানুষের অশান্তি সৃষ্টি করা হারাম। ঈদ হলো আনন্দের দিন, কষ্টের দিন নয়।
আনন্দ করার সময় এটাও মনে রাখতে হবে আনন্দের নামে এমন কোনো কিছু যেন না করি যা পরকালের চিরস্থায়ী কান্নার কারণ হয়।