বছরে দেড় কোটি মানুষ জামকারান মসজিদ দেখতে আসেন

মসজিদ পরিচিতি, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 07:44:34

ইরানের ৩১টি প্রদেশের অন্যতম প্রদেশের নাম কোম। এটি ইরানের উত্তরে অবস্থিত। আগে এটি তেহরান প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। কোম শহরে জামকারান গ্রামে ঐতিহাসিক জামকারান মসজিদ অবস্থিত। অতীতে মসজিদটি ‘কাদামগাহ’ মসজিদ নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে জামকারান গ্রামের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে ধীরে ধীরে এর নাম হয় জামকারান মসজিদ।

১৯৫৫ সালে জামকারান মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এর আগে ১৭৫৩ সালে আরেকবার মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। পুনর্নির্মাণের সময় মসজিদের দক্ষিণ আঙিনায় ছয়টি স্তম্ভের ওপর ১৭ মিটার লম্বা ও চার মিটার চওড়া একটি হল নির্মাণ করা হয়। আসলে এটি ছিল মসজিদের প্রধান ফটক।

মসজিদের পূর্বপাশের আঙিনায়ও রয়েছে ১৩ মিটার লম্বা ও চার মিটার চওড়া একটি হল। এই হলটির সৌন্দর্য বাড়াতে সাত রঙের টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালে ইরানের বিপ্লব সফলের পর এই মসজিদে মুসল্লি ও জিয়ারতকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। ফলে এর আয়তন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ কারণে মসজিদের মূল ভবন সম্পূর্ণ ভেঙে জামকারান মসজিদের নতুন সীমানা নির্ধারণ করা হয়। মসজিদের চারপাশের কৃষিজমি কিনে মসজিদের সীমানার অন্তর্গত করা হয়। সব মিলিয়ে ৪০ হেক্টর জমি মসজিদের নামে ওয়াক্ফ করা হয় যার মধ্যে সাড়ে ৫ হেক্টর বরাদ্দ দেওয়া হয় মসজিদের আঙিনার জন্য।

মসজিদের নতুন ভবনের নাম দেওয়া হয় মসজিদে মাকাম। আর নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় আধুনিক সব উপকরণ ব্যবহার করে। মসজিদের মেঝে ও দেয়ালে বসানো হয় চমৎকার কারুকার্যশোভিত টাইলস। মসজিদে প্রবেশের জন্য তিনটি প্রধান ফটক স্থাপন করা হয়। এসব ফটক দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমে সামনে দেখা যাবে জামকারান মসজিদের বিশাল আঙিনা। আঙিনা পেরিয়ে মসজিদের মূল প্রবেশপথের ওপরে চোখে পড়বে বিশাল একটি গম্বুজ এবং দুই পাশে রয়েছে ৬০ মিটার উঁচু দু’টি মিনার।

ফিরোজা রঙের টাইলসে মোড়ানো এবং চমৎকার ক্যালিওগ্রাফিতেসমৃদ্ধ গম্বুজ ও মিনার দু’টি দেখলে যে কোরো চোখ জুড়িয়ে যাবে।

জামকারান মসজিদের ভেতরের বিশাল হল আটকোণ বিশিষ্ট। মসজিদের উত্তর পার্শ্বে রয়েছে তিনটি প্রবেশপথ এবং দক্ষিণ পার্শ্বে স্থাপন করা হয়েছে আরও দু’টি দরজা। মসজিদের ভেতরের হল থেকে ওপরের দিকে তাকালে গম্বুজের ভেতরের অংশ দেখতে পাওয়া যায় সৌন্দর্য বাইরের আবরণের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

প্রতি বছর এই মসজিদটি দেখতে আসেন শতাধিক দেশ থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ। এসব দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইরাক, পাকিস্তান, লেবানন, বাহরাইন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, আজারবাইজান, জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, স্পেন, ডেনমার্ক এবং কানাডা।

জামকারান মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও আল মুস্তফা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে পর্যটকরা মসজিদটি ঘুরে ঘুরে দেখেন। মসজিদ দেখতে আসা বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থী জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থার পাশাপাশি রয়েছে স্বেচ্ছাসেবী দোভাষী। যারা মসজিদটি ঘুরে দেখতে দর্শনার্থীদের সহায়তা করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর