ঈশ্বরের হাতে হেঁটে মেঘের রাজ্যে

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 19:07:20

ভিয়েতনামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শহর দানাং। সেখানকার সবুজ গাছপালা আর পাথুরে পাহাড় ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে বিশালাকারের দুইটি হাত। অনেকেই তার নাম দিয়েছে ‘ঈশ্বরের হাত’। না, ভয়ের কিছু নেই। এটা ফুটবল কিংবদন্তী ম্যারাডোনার ‘ঈশ্বরের হাত’ও নয় যা দিয়ে গোল হয়। এই হাতে ধরা আছে সোনালি রঙের ঝলমলে সেতু। যে সেতু দিয়ে হেঁটে হেঁটে মানুষ মেঘের রাজ্যে মিশে যেতে পারে।

দানাং বা স্থানীয় ভাষায় বা-না হিলসের গায়ে নির্মিত এই সোনালি সেতুটি ১৫০ মিটার দীর্ঘ। পাহাড় ও জঙ্গলের বুক চিরে সাপের মতো আঁকাবাঁকা সেতুটি গিয়েছে পাশের এক পাহাড়ে। দূর থেকে দেখে মনে হয় ঈশ্বরের হাতে একটি সোনালি সাপ ধরা আছে।

সোনালি সেতুটি গত জুন মাসে উদ্বোধন করা হয়েছে। এরপর থেকে প্রচুর দর্শনার্থী, পর্যটকের ঢল নামে সেখানে। স্টিল, কংক্রিট আর ফাইবার গ্লাসের তৈরি এই বিস্ময়কর স্থাপত্য কীর্তির উপর দিয়ে হাঁটার সময় গোটা শহর দেখা যায়। চারপাশের অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ ও সাদা মেঘ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে তোলে। পায়ে হেঁটে সেতুটি পারি দিতে হয়, গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ।

হ্যানয় থেকে আসা দর্শনার্থী ভোং থুই লিনহ বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল আমি মেঘের মধ্যে দিয়ে হেঁটে চলেছি, এটা এতটাই ইউনিক।’

জানা যায়, সেতুটির নকশা করেছে হো মিন সিটির টিএ ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার। সেতুটির মূল স্থপতি ভু ভিয়েত আন চেয়েছিলেন, ঈশ্বরের হাতে ধরা একটা সোনালি সুতোর মতো যেন দেখতে লাগে এটিকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার মিটার উপরে তৈরি হয়েছে এই সেতু। নির্মাণে ভিয়েতনাম সরকার ব্যয় করেছে ২ বিলিয়ন ডলার। 

থ্রুং হাওং লিন্হ থুই নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘ওই দুটো দানবাকৃতির হাত দেখতে খুবই বাস্তব মনে হয়।’

ব্রিজটি দেখে আমার মনে হয়েছে মানুষের পক্ষে যেকোনো কিছুই যে সম্ভব, মন্তব্য করে  অপর দর্শনার্থী।

এদিকে গোল্ডেন ব্রিজের পর ভিয়েতনামে শুরু হয়েছে সিলভার ব্রিজের কাজ। হ্যান্ড অব গডের পর এ বার হেয়ার অব গড ব্রিজ। হাতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি হবে চুল, তার মধ্য দিয়ে হবে রুপালি সেতু।

উল্লেখ্য, ১৯১৯ সালে ভিয়েতনামের শাসক ছিল ফরাসিরা। তাদের উপনিবেশ ছিল বা-না হিলসে। এই সেতু ছাড়াও বা-না হিলসে রয়েছে পাহাড়ের উপর দিয়ে যাতায়াতের জন্য কেবল কার। অসংখ্য প্রাসাদ আর ক্যাথেড্রাল-সমৃদ্ধ মধ্যযুগের ফরাসি অধ্যুষিত গ্রামের ছোঁয়াও দেখতে পাওয়া যায়। মনভোলানো বাগানে চোখ জুড়িয়ে যাবে। গতবছরেও সেখানে প্রায় ২.৭ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এ বছর সে সংখ্যাটা আরো বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর