অর্থনৈতিক মন্দা থেকে চোখ ঘোরাতেই কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল

ভারত, আন্তর্জাতিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কলকাতা | 2023-08-28 04:04:02

ঠিক যেমন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান সরকার যে আচরণ করেছিল সেই আচরণ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের সঙ্গে করল। এই মত পোষণ করে কলকাতা প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখান ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক ইমানুল হক।

৩৭০ ও ৩৫ ধারা আইনের পক্ষে এ বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক কলকাতার মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, হকার আন্দোলনের নেতা শক্তিমান ঘোষ, স্বাস্থ্য আন্দোলনের নেতা বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, স্বরাজ অভিযানের নেতা কল্যাণ চক্রবর্তী।

উদ্যোক্তা ইমানুল হক বলেন, সোমবার (৫ আগস্ট) কাশ্মীর রাজ্যের অধিকার হরণ করা হলো, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত করা হলো। যেটা কাশ্মীরের জনগণের ইচ্ছার সঙ্গে কোনভাবেই সংগতিপূর্ণ নয়। ১৯৩৫ সালে রাজা হরি সিং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কথা মেনে নিয়ে কাশ্মীরের জনগণ ছাড়া তাদরে জমি আর কেউ কিনতে পারবে না- এরকম একটি আইন বানিয়ে ছিলেন। সেই সময় ওই আইন ভারত সরকারও মেনে নিয়েছিল। সেই আইন আজ বাতিল করা হলো।

শুধু কাশ্মীরে নয় নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, হিমাচল প্রদেশ ও ত্রিপুরায় আছে একইরকম আইন। ঝাড়খন্ডে আছে, সিকিমেও আছে। এই আইন এমনকি পশ্চিমবঙ্গের সাঁওতাল আদিবাসীদের জন্যও আছে। কিন্তু কোথাও এ নিয়ে কোনো কথা বলা হলো না, শুধু করা হলো কাশ্মীরে। এটা সাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য।

৩৭০ ধারার অনুরূপ ৩৭১ ও ৩৭২, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম সিকিমসহ ১১টা রাজ্যে আছে। সেই রাজ্যেও বাইরের লোক জমি কিনতে পারে না।

নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশে পারমিট নিয়ে সেখানে ঢুকতে হয়। কাশ্মীরে হয় না। কাশ্মীরের আইন-শৃঙ্খলা যথেষ্ট ভালো ছিল সেটাকে এরা অশান্ত করল। কাশ্মীরের সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করা হয়েছে। কার্যত ওখানে এখন জরুরি অবস্থা চলছে। এখন শুনছি ওখানে গণহত্যার পরিকল্পনা চলছে।

সেখানে লোকাল থানার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি আরও ৪৩ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দেশের পক্ষে মোটেও ভালো হলো না। কাশ্মীরে প্রচুর ভারতপ্রেমী জনগণ ছিলেন তাদেরও ক্ষেপিয়ে তোলা হলো। যারা চাইতেন ভারতবর্ষের সঙ্গে থাকবে তাদেরও বিপদে ফেলা হলো।

ফলে এটা জঙ্গিবাদকে মদদ দেবে। চীনসহ অন্যান্য বিদেশি শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো এর সুযোগ নেওয়া শুরু করবে। সুতরাং আমাদের দাবি কাশ্মীরে ৩৭০ ও ৩৫ নং ধারা ফিরিয়ে দেওয়া।

ভারতবর্ষের যে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, উন্নয়ন নেই, কর্মসংস্থান নেই, আসামে এনআরসির নামে বাঙালি খেদাও, এইসব থেকে চোখ ঘোরাতে আজ এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো জানান ইমামুল হক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর