মোদি-অমিত জুটি গুজরাতের সর্বময়

ভারত, আন্তর্জাতিক

খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 20:37:41

গুজরাতের আহমেদাবাদ থেকে: গুজরাতে ২০১৪ সালে লোকসভার সবগুলো আসন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জিতেছিল। এবার রাজ্যটিতে যেভাবেই হোক, জয় বহাল রাখতে চায় মোদি-অমিত জুটি। তারাই গুজরাতে সর্বময় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিরাজ করছে।

গুজরাতে একদিনই ভোট হবে। সেটি হলো- ২৩ এপ্রিল। এরই মধ্যে রাজ্যটির রাজনীতিতে নানাবিধ রসায়ন কাজ করছে।

এবারের নির্বাচনে বিজেপি তাদের অন্যতম নেতা এলকে আদভানিকে প্রতিযোগিতা থেকে বসিয়ে দেয়। তিনি গান্ধিনগর থেকে নির্বাচন করে আসছিলেন, বর্তমানে সেখান থেকে নির্বাচন করছেন দলটির প্রধান অমিত শাহ। এর ফলে গুজরাতে বিজেপির রাজনীতির সর্বময় নিয়ন্ত্রণ নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ জুটির হাতে চলে এসেছে।

অন্যদিকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস তথা বিরোধী দলের হারানোর কিছু নেই। তারা ২০১৪ সালে কিছুই পায়নি। কিন্তু ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ভালো ফল করেছিল; যা কংগ্রেস সমর্থকরা চিন্তাও করেননি। তবে সেসময় থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, কংগ্রেসের অনেক নেতাকেই বিজেপি কিনে নিয়েছে। তাদের নেতা আলপেশ ঠাকুর বিজেপিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তাতে রাজনীতির কোনোও নৈতিকতা মানা হয়নি।যদিও কিছু দিন আগেও গান্ধিনগরের সমাবেশে করেছেন কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী ও আলপেশ ঠাকুর।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ১৮২ আসনের গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৯৯টি আসনে জয়ী হয়। এমন ঝলকানি দেখানোর পর বর্তমানে দলটি তার আটজন এমএলএ হারিয়েছে।

এদের মধ্যে পাঁচজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আলপেশ ও তার দুই সহকর্মী বিজেপিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে তারা কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন। তারা বলেছেন, তারা এমএলএ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন না বরং স্বাধীন বিধায়ক হিসেবে বিবেচিত হবেন।

এদিকে, কংগ্রেসের একটি বড় সমস্যা রয়েছে। সেটি হলো- বিধানসভা নির্বাচনে তাদের বিধায়ক সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ৬৯টি আসন হয়েছে। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি বিরোধী নেতৃত্বে দেওয়ার জন্য উচ্চ প্রোফাইল নেতা এখন আর গুজরাতে নেই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/13/1555138691305.jpg

দাঙ্গা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে কংগ্রেস নেতা হার্ডিক প্যাটেলও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। উত্তর গুজরাতে চারটি আসন নিয়ে কংগ্রেসের আশা ছিল। এখানে হার্ডিক, জগেশেশ মভানি ও আলপেশের মধ্যে 'শক্তিশালী রাজনৈতিক সিন্ডিকেট' ছিল।

মভানি ও হার্ডিক, দু’জনেই আলপেশ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে ফেলছেন। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস বেকায়দায় পড়ে গেছে। যে উন্নয়নের কথা বলে গুজরাতের নামে সমস্ত ভারতে প্রচার করে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিল, বর্তমানে তার প্রতিফলন ভোটের মধ্যে পড়বে না বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

রাজেন কুমার বার্তা২৪.কমকে বলেন, শুধু বিরোধীকে নিশ্চিহ্ন করতে চাওয়ার মাধ্যমে বিজেপি নিরঙ্কুশ আসন পাবে না। গুজরাতে শুধু বিজেপি ও কংগ্রেস শাসন করেছে। এখন দরকার, বিকল্প কোনো দল বা জোট ক্ষমতায় আসুক।

প্রণব ভাই বলেন, গত পাঁচ বছরে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়েছে। সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পালন করতে না পেরে অন্য ইস্যু তুলে ধরছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক রাজ্যের আরেক ভোটার বলেন, সব কিছুর পরেও এখানে বিজেপিই জিতবে। আজ জাতীয়তাবাদ ও হিন্দুত্ববাদ যেভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, মানুষ ভোট দেওয়ার সময় এছাড়া কিছুই চিন্তা করতে পারছে না।

গুজরাতে চাকরির বিশাল সংকট রয়েছে। দলিতরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মাঝে-মাঝেই আন্দোলন করছেন তারা। এরই মাঝে কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, জনগণের ক্ষোভ তাদের জন্য ভোটে পরিণত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর