পাকিস্তানে সার্ক সম্মেলন না হওয়ার দায় বাংলাদেশের : খাজা আসিফ

, আন্তর্জাতিক

সেন্ট্রাল ডেস্ক ৪ | 2023-08-27 14:41:34

পাকিস্তানে সার্কের ১৯তম সম্মেলন না হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। পাকিস্তান রেডিওর বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে দেশটির ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সার্কের শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও ভারত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ভুটান তাতে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সম্মেলনটি পণ্ড হয়। ওই সময় ভারত শাসিত কাশ্মিরে সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা হয়, যার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দেয় নয়া দিল্লি। এদিকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ইসলামাবাদের প্রতিক্রিয়া এবং তা নিয়ে কূটনীতিক টানাপড়েনের মধ‌্যে বাংলাদেশও সার্ক সম্মেলন বর্জনের সিদ্ধান্ত জানায়। পরে আফগানিস্তান ও ভুটানও একই পথে হাঁটে। সে সময় ওই সম্মেলন পণ্ড হওয়ার জন্য ভারতকে দুষেছিল পাকিস্তান। কিন্তু বৃহস্পতিবার খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তানে সার্কের সরকার প্রধানদের সম্মেলন পণ্ড করার চেষ্টায় বাংলাদেশ জড়িত ছিল। ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ইসলামাবাদ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করলেও বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আগের অবস্থানের আছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কে উত্তেজনা চায় না পাকিস্তান। “বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়ন করছে না এবং গত কয়েক বছরে তারা ১৯৭১ এর যুদ্ধ সংশ্লিষ্টতায় কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।” একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে যুদ্ধপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর ক্ষোভ জানিয়ে নিজেদের অবস্থানের পক্ষে এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তির দোহাই দিয়ে আসছে পাকিস্তান। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধাপরাধে নিজ দেশে বিচার করা হবে শর্ত দিয়ে ১৯৫ জন সেনা সদস্যকে ফেরত নেয় পাকিস্তান। ওই চুক্তিতে অন্যান্য যুদ্ধপরাধীদেরও ‘দায়মুক্তির কথা’ বলা হয়েছিল বলে দাবি করছে সেনা সদস্যদের যুদ্ধাপরাধের বিচার না করে চুক্তির শর্ত লংঘনকারী ইসলামাবাদ। তাদের ওই দাবি প্রত‌্যাখ‌্যান করে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাকিস্তান ওই চুক্তির বিষয়ে বিভ্রান্তিকর ও আংশিক ব‌্যাখ‌্যা হাজির করেছে, যা ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ‌্য’। “যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পরিকল্পনাকারী ও দালালরা দায়মুক্তি ভোগ করবে বা বিচার এড়িয়ে যাবে- এরকম কোনো ইঙ্গিত ওই চুক্তিতে ছিল না।” এ বছরের প্রথম ভাগে ঢাকায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক পরামর্শক সভা হওয়ার কথা জানিয়ে খাজা আসিফ বলেন, এটা দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে একটা সুযোগ তৈরি করবে বলে তিনি আশা করছেন।  

এ সম্পর্কিত আরও খবর