ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েলের ৩ বিকল্প

, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-04-15 19:55:25

ইরানের এই প্রত্যক্ষ হামলার জবাবে ইসরায়েলের যুদ্ধ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা ৩ ধরনের বিকল্প উপায় গ্রহণ করতে পারবে বলে মনে করেন বিবিসির ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার। বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে তিনি এই উপায়গুলো জানিয়েছেন।

প্রথমত, ইসরায়েল একটি ‘স্ট্র্যাটেজিক পেশেন্স’ বা কৌশলগত ধৈর্য প্রদর্শনের রাস্তায় হাঁটতে পারে। অর্থাৎ সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা হামলা না চালিয়ে তারা ওই অঞ্চলে ইরানের যেসব শরিকরা আছে তাদের ওপর অভিযান চালিয়ে যাবে। এর মধ্যে আছে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী, সিরিয়াতে অবস্থিত ইরানের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ কেন্দ্রসমূহ।

দ্বিতীয়ত, ইরান যে ধরনের হামলা চালিয়েছে ইসরাইলও দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাল্টা ঠিক সেই ধরনের হামলা চালাতে পারে। এসব হামলার নির্দিষ্ট লক্ষ্য হবে ইরানের সেই ক্ষেপণাস্ত্রের ঘাঁটিগুলো। তবে ইসরাইল যদি এই অপশনটা বেছে নেয়, তাহলে ইরান সেটাকেও ‘এসক্যালেশন’ বা যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবেই দেখবে। কারণ বহু বছরের বৈরিতা সত্ত্বেও ইসরায়েল ইতিপূর্বে কখনওই সরাসরি ইরানের ভূখণ্ডে কোনো হামলা চালায়নি। বরং তারা ওই অঞ্চলে ইরানের সঙ্গী বা প্রক্সি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আক্রমণেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছে।

তৃতীয়ত, ইসরায়েল যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টায় ইরানের চেয়েও অনেক শক্তিশালী পাল্টা হামলা চালাতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা শুধু নির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র বেসগুলোই নয়, ইরানের অত্যন্ত শক্তিশালী রিভোলিউশনারি গার্ডসের ঘাঁটি, প্রশিক্ষণ শিবির ও কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টারগুলোকেও আক্রমণের নিশানা করবে।

ইসরায়েল যদি এই শেষ দুটো অপশনের কোনওটা বেছে নেয়, তাহলে ইরানকেও অবশ্যই আবারও পাল্টা আঘাত হানার পথে যেতে হবে। আর একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, এই সংঘাতে কি আমেরিকাও জড়িয়ে পড়তে পারে?

উপসাগরীয় আরব অঞ্চলের ছ’টি দেশেই কিন্তু মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আছে। এছাড়া তাদের সামরিক ঘাঁটি আছে সিরিয়া, ইরাক ও জর্ডানেও। বহু বছরের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান যে ব্যালিস্টিক ও অন্য নানা ধরনের মিসাইলের বিপুল ভাণ্ডার তৈরি করেছে, মার্কিন এই সামরিক ঘাঁটিগুলো সেই সব ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানায় পরিণত হতে পারে।

ইরান দীর্ঘদিন ধরেই আর একটা হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে যে তারা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে তারা হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে।

কৌশলগতভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সমুদ্রপথটি যদি ইরান মাইন, ড্রোন ও ফাস্ট অ্যাটাক ক্র্যাফট দিয়ে বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ত রুটটি অচল হয়ে পড়বে এবং বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের এক-চতুর্থাংশ স্তব্ধ হয়ে যাবে।


এ সম্পর্কিত আরও খবর