‘যুক্তরাষ্ট্র কোথাও নিরপরাধ বেসামরিকদের হত্যা দেখতে চায় না’

আমেরিকা, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম | 2023-10-10 22:41:52

যুক্তরাষ্ট্র গাজা এবং ইসরায়েলসহ কোথাও নিরপরাধ বেসামরিকদের হত্যা দেখতে চায় না-বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি।

মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তার প্রথম দফা ইসরায়েলে পাঠানোর সময় মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) তিনি ওই মন্তব্য করেন।

সিএনএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা যে বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছি তা হলো, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করা এবং হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সামরিক সহায়তার প্রথম দফা ইসরায়েলে পাঠানোর সময় আমরা এই কথা বলছি।’

যুক্তরাষ্ট্র বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে ইসরায়েলকে কোনও সতর্কতা জারি করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বের কোথাও কোনো নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা দেখতে চাই না এবং এখানে অবশ্যই গাজা এবং ইসরায়েল অন্তর্ভুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ ইসরায়েলে গত শনিবার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে হামাসের হাতে অনেক নিরীহ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।’

কিরবি বলেন, ‘একটি প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে ইসরায়েল আমাদের অনেক মূল্যবোধ এবং স্বার্থ বহন করে এবং অবশ্যই সেই মূল্যবোধগুলোর মধ্যে একটি হলো জীবনের প্রতি সম্মান।’

কিরবি সিএনএন এবং এমএসএনবিসিকে আরও বলেছেন, ‘অতিরিক্ত মার্কিন সামরিক সহায়তার প্রথম দফা ইসরায়েলে যাওয়ার পথে রয়েছে।’

এনডিটিভি জানিয়েছে, কিরবি সোমবার বলেছিলেন, ‘হোয়াইট হাউস ইসরায়েলের কাছ থেকে অতিরিক্ত নিরাপত্তার অনুরোধ আশা করছে এবং যত দ্রুত সম্ভব সেই চাহিদাগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবে।’

এদিকে, হামাসের কাছে জিম্মি দেড় শতাধিক ইসরায়েল ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মুক্তি দিতে হামাসের হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে কাতার।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিকদের একটি দল হামাসকে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদেরও মুক্তির বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। একই প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা শুরু করেছে দলটি।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার (৭ অক্টোবর) হামলার প্রথম দিন থেকেই হামাস ও ইসরায়েলের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে হামাস। এই আলোচনার উদ্দেশ্যে সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে আনা এবং দুই ভূখণ্ডের জিম্মি ও বন্দি বিনিময় করা।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি রয়টার্সকে বলেন, আলোচনার গতি ও এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল বেশ ইতিবাচক। এই মুহূর্তে সব পক্ষের সঙ্গেই সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো সহিংসতার মাত্রা হ্রাস করা, বন্দি ও জিম্মি বিনিময় এবং এই সংঘাত যেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে না পারে তা নিশ্চিত করা।

শনিবার ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ৫ শতাধিক মানুষ। বর্তমানে এই সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৬০০। এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯০০ জন ইসরায়েল ও অন্যান্য দেশের নাগরিক, বাকিরা ফিলিস্তিনি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শনিবার ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর দিনই কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানিকে টেলিফোন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

ওই ফোনালাপে ব্লিনকেন কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে এই সংকটে মধ্যস্থতার ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান এবং প্রধানমন্ত্রীও তাতে দায়িত্বের সঙ্গে সাড়া দেন।

উল্লেখ্য টানা ৪ দিনের হামলায় বেশ কয়েকজন নারী, পুরুষ, শিশু ও বয়স্ক ইসরায়েলি নাগরিককে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায়। জিম্মি বিনিময়ের মাধ্যমে সংকট সমাধানে কাজ করছে কাতার প্রশাসন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর