দুবাইতে আলোচনায় বাংলাদেশের মাঝি

, প্রবাসী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-27 08:32:31

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ছইওয়ালা ও ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকাগুলোকে বলা হয় আব্রা। আর এই আব্রার চালক হিসেবে বাংলাদেশি ছাড়াও কাজ করেন ভারত, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার অভিবাসী শ্রমিকেরা। তবে হঠাৎ করেই আরব আমিরাতের টক অব দ্যা টাউন হয়ে উঠেছেন আব্রার বাংলাদেশি মাঝি মোহাম্মদ আলম। দুবাইতে আব্রার এই মাঝিকে অবশ্য বলা হয় ক্যাপ্টেন। এসব আব্রায় পর্যটক বা শহরের মানুষ বেড়াতে উঠলেও রাজ পরিবারের কেউ বা রাজ কর্মকর্তারা কিন্তু উঠেন না।

আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইতে পর্যটন নয় শুধু অর্থনীতিতেও ব্যস্ত লেক ‘ক্রিক’। বিকেল আর সন্ধ্যায় দুবাই শহরের মানুষ আর পর্যটকদের জন্যে ঘুরাফেরার অন্যতম জায়গা এই লেক ক্রিক। এই লেকের পাড়ে সারিবদ্ধ হয়ে সাজানো থাকে আব্রা। এর মধ্যে ৬০ নং আব্রাটি হয়ে উঠেছে দুবাই শহরের আলোচনা আর আকর্ষণের বাহন। ৬০ নং আব্রার মাঝি বাংলাদেশি আলম।

ঘটনাটি হচ্ছে, আরব আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মৌকতুম ৬০ নং আব্রায় করে দুবাইয়ের পুরনো সৌক বা বাজার থেকে দেইরা এলাকার গোল্ড সৌকে ভ্রমণ করেছেন। আর এরই সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসেন মোহাম্মদ আলম।

আলম স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, তার বাড়ি বাংলাদেশের কক্সবাজারে। প্রতিদিন ভোর ৫টায় তিনি ঘুম থেকে উঠেন এবং ৬টায় কাজে যোগ দিয়ে শহরবাসীকে লেক পাড় করাচ্ছিলেন। তবে গত সোমবার (সেপ্টেম্বর ০৩) ছিল অন্যরকম। লেকের পাড়ে অনেকগুলো আব্রা ছিল, অনেক আব্রার ক্যাপ্টেন ছিলেন। তবে শেখ মোহাম্মদ তার দলের সদস্যদের নিয়ে বেশ কয়েকটি আব্রা পেরিয়ে আমার আব্রাকেই পছন্দ করেন ওঠার জন্যে।

তিনি বলেন, আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এখানে আরো অনেকে থাকা সত্ত্বেও দুবাইয়ের শাসক আমার আব্রায় উঠেছেন। এরপর থেকে অনেকেই আমাকে দেখতে আসছেন, ছবি তুলছেন এবং সাংবাদিকরাও খোঁজ নিচ্ছেন। যেন আমি হঠাৎ করেই তারকা বনে গিয়েছি।

আলম আরো বলেন, আমার আব্রায় করে শেখ মোহাম্মদের এই ভ্রমণে আমি সন্মানিত হয়েছি। তিনি আমার সঙ্গে করমর্দন করেছেন এবং আমার জীবন ভাল চলছে কিনা, জিজ্ঞাসা করেন। আমি শুধুই সালাম জানাতে পেরেছিলাম।

তিনি বলেন, পুরনো সৌক থেকে গোল্ড সৌকে যেতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগে। তবে এই সময়টা আমার জীবনের স্মরণীয়। আমি খুব সাবধানে আব্রা চালাচ্ছিলাম। আমি এখনও আমার স্ত্রীকে এই ঘটনাটি বলিনি। তবে অবশ্যই বলব। এখন অনেকেই এখানে আমার সঙ্গে ছবি তুলতে আসেন বা জিজ্ঞাসা করেন ৬০ নং আব্রা কোনটা?

দুবাইয়ের আল রাস এলাকায় বাস করেন আলম এবং মাসে কমিশনসহ এক হাজার দিরহাম বা ২৩ হাজার টাকার বেশি আয় করেন। তার বাড়িতে স্ত্রী এবং ৪ এবং ১০ বছর বয়সী দুই সন্তান রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর