কফি খান, তবে…..

, ফিচার

সেন্ট্রাল ডেস্ক ৩ | 2023-09-01 15:25:40

কফি।এই পানীয়টি যতই ক্লান্তি দূর করে শরীরকে চনমনে করে তুলুক না কেন, বেশি মাত্রায় পান করলেই কিন্তু লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি! কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফেইনযুক্ত এই পানীয়টি যতটা উপকারি, ততটাই কিন্তু ক্ষতিকারক। তাই সাবধান! কিন্তু ঠিক কত কাপ কফি খেলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে? এই বিষয়ক হওয়ার গবেষণায় দেখা গেছে দৈনিক তিন কাপের বেশি কফি পান একেবারেই উচিত নয়। আর যদি তা চার কাপ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে তো কথাই নেই! সেক্ষেত্রে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল যদি কেউ প্রতিদিন চার কাপের বেশি কফি পান করতে থাকেন, তাহলে এক্ষেত্রে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে শরীরের? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে দিনে চার কাপের বেশি কফি খাওয়া শুরু করলে হঠাৎ করে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা বাড়তে শুরু করে। এই বিষয়ে মাও ক্লিনিকের করা একটি স্টাডিতে এমনও দাবি করা হয়েছে যে যারা একেবারে শরীরচর্চা করেন না এবং কাপের পর কাপ কফি খেয়ে থাকেন, তাদের সময়ের আগে মারা যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই কফি লাভাররা আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন, সুস্থভাবে বাঁচতে চান, নাকি কফির প্রেমে জীবন দিতে চান! মায়ো ক্লিনিকের করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা ইতিমধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় ভুগছেন, তারা যদি দিনে দু কাপের বেশি কফি খাওয়া শুরু করেন, তাহলে রক্তচাপ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, কফি পানের পর প্রায় দু’ঘন্টা পর্যন্ত রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে চায় না। এমন পরিস্থিতিতে মারাত্মক কিছু ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা যে থাকে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। প্রসঙ্গত, রক্তচাপ দীর্ঘ সময় স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সাবধান! পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন গত কয়েক বছরে ৩০-৪৫ বছরের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পয়েছে। এমনটা হওয়ার পিছনে যে যে কারণগুলো দায়ি, তার মধ্যে অন্যতম হল কফি পানের অভ্যাস। কিন্তু কফির সঙ্গে হার্টের ভাল-মন্দের কী সম্পর্ক? বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বেশি মাত্রায় কফি খেলে শরীরে ক্যাফেইনের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। আর যেমনটা আগেই বলা হয়েছে যে রক্তচাপ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের উপর মারাত্মক চাপ পরে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ে। প্রসঙ্গত, বর্তমান সময়ে নানা কারণে যুব সমাজের সিহংভাগেরই শারীরিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়, তার উপর কফি পানের অভ্যাস যে পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তোলে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আপনি কী কোনো কারণে জয়েন্ট পেনে ভুগছেন? তাহলে ভুলেও কফি খাবেন না যেন! কারণ গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে এমন অবস্থায় কফির মতো পানীয় পান করলে কষ্ট আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ কফির অন্দরে থাকা বেশ কিছু উপাদান জয়েন্টে প্রদাহ বাড়ায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই বিষয়ক হওয়া বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে যে সব নারীরা দিনে ৩১-২৫০ এমজি ক্যাফেইন সেবন করে থাকন, তাদের ফাইব্রোসিস্টিক ব্রেস্ট ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তাই তো এই বিষয়টি খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া কফিতে উপস্থিত ক্যাফেইন হল এক ধরনের উদ্দীপক, যা বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যে ঘুম একেবারে দূরে পালায়। সেই সঙ্গে শরীর একেবারে চনমনে হয়ে ওঠে। তবে প্রতিদিন যদি এমনটা করতে থাকেন, তাহলে এক সময়ে গিয়ে ইনসমনিয়ার মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে কফি পান করলে হজম ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে শুরু করে। এমনিতেই আমরা বাঙালিরা হলাম খাদ্যরসিক, তাই বদহজম আমাদের নিত্য সঙ্গী। তার উপর যদি কেউ কাপের উপর কাপ কফি খতম করতে থাকেন, তাহলে পেটের অন্দরের পরিস্থিতি যে একেবারে বিগড়ে যায়, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। অনেকতেই মনিং হেডেক কমাতে সকাল সকাল খালি পেটে কফি পান করে থাকেন। কারণ তাদের মনে হয়, এমনটা করলে মাথা যন্ত্রণা কমে যায়। কিন্তু আদতে এমনটা হয় না কিন্তু! কারণ একাধিক কেস স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে কফি পানের সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা কমার কোনো সম্পর্ক নেই, বরং বেশি মাত্রায় এই পানীয়টি পান করলে মাথাব্যথা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর