লুকিয়ে থাকতে পারদর্শী বৈকাল ঝাড়ফুটকি

, ফিচার

বিভোর বিশ্বাস, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2023-08-30 00:55:13

বাংলাদেশের প্রিয় জলাভূমিগুলোতে ফিরে আসে ছোট-বড় পরিযায়ী পাখিরা। শুধু জলাভূমিই নয়; হিজল, করচ, হেলেঞ্চা, কলমীলতা আর বুনো ঝোপঝাড়ের ডালে ডালে পোকার সন্ধানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ছোট পরিযায়ীরাও।

শীত মৌসুমে জলাভূমির পরিযায়ী পাখিদের মিলন মেলায় সবিশেষ গুরুত্বে অংশ নিয়েছে মাত্র প্রায় এগারো সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের ‘বৈকাল ঝাড়ফুটকি’। এর ইংরেজি নাম Baikal Bush-warbler এবং বৈজ্ঞানিক নাম Locustella david.

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক এ বিষয়ে বলেন, বৈকাল হ্রদের আশেপাশে এই পাখিটিকে বেশি দেখা গিয়েছিল বলে এর নামকরণ হয়েছে ‘বৈকাল বুশ-ওয়াবলার’। আর আমরা বাংলায় এর নাম রেখেছি ‘বৈকাল ঝাড়ফুটকি’। এই পাখিটি যে এতো দূরে থেকে শীত মৌসুমে আমাদের দেশে আসে তা আগে আমাদের কারোরই জানাই ছিল না। মাত্র কয়েক বছর ধরে জানা গেছে- আমাদের দেশের শীত পরিযায়ী সে।

এ পাখিটির প্রাপ্তি সম্পর্কে তিনি জানান, এই পাখিটি এতোটাই লুকিয়ে থাকতে পারদর্শী যে, বাইনোকুলার দিয়ে দেখে তাদের সঠিকভাবে সনাক্ত করা সম্ভব নয়। কিন্তু যখন জাল দিয়ে ধরা হয় তখন তো আমাদের হাতেই আসে এবং তখনই চেনা সহজ হয়। এইভাবেই আমরা সে সময় প্রথম এই পাখিটিকে আমাদের বাইক্কা বিলে পেয়েছিলাম।

পোকার সন্ধানে ব্যস্ত ‘বৈকাল ঝাড়ফুটকি’। ছবি: শাহানুল করিম চপল

তিনি আরো বলেন, এখন আমরা জানি যে, ভারতবর্ষের বেশ কয়েকটা জায়গায় সে শীতমৌসুমে আসে। তার মানে ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডে প্রতিবছরই এরা আসে। আবার এরা গ্রীস্মে ফিরে যায় পূর্ব রাশিয়া এবং উত্তরপূর্ব চীনের তাইগা অঞ্চলে; যেখানেই তারা প্রজনন করে থাকে।

‘বৈকাল বুশ-ওয়াবলার’ পাখিটিকে চেনার উপায় হলো- ওর লেজের নিচে যে পালকগুলোর মধ্যে ঢেউয়ের মতো বাঁকানো এক সারি দাগ থাকবে। আবার গলার নিচে বুকের কাছে কালো কালো টান থাকবে। এরকম অনেক কিছু দেখে দেখে খুবই সুক্ষ্মভাবে আলাদা করতে হয়। নয়তো ‘বৈকাল বুশ-ওয়াবলার’ অন্য ওয়াবলার সাথে মিশে যাবে, একটা ওয়াবলার থেকে অন্য ওয়াবলার খুব বেশি আলাদা তো না। খুব সুক্ষ্মভাবে না দেখলে এ পাখিটিকে চেনা আসলেই খুব কঠিন বলে জানান প্রখ্যাত পাখিবিদ ইনাম আল হক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর