‘ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত’ ঢাকায় শুনে চমকে উঠেন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা!

, বিনোদন

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা টোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-26 08:46:10

বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় একটি খবর দেখে চমকে উঠেছিলেন এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা পুলিশের বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর শোয়েব চৌধুরী (ছন্মনাম)।  ‘অবশেষে ঢাকায়’ শিরোনামে ওপার বাংলার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের একটি খবর দেখেই তার এই চমকে ওঠা।

অজানা আশঙ্কায় শিউরে উঠলেন তিনি। এই রে চাকরি নেই। কোন ফাঁক গলিয়ে অভিনেত্রী ইমিগ্রেশন ছাড়াই বাংলাদেশে ঢুকলেন এমন শংকা নিয়ে নিজেই যোগাযোগ শুরু করেন। কারণ গতরাতে তার ডিউটি ছিলো ইমিগ্রেশনের আগমনী কাউন্টারে। খবর নিলেন ভিআইপি কাউন্টারে। সেখান থেকেও জবাব এলো, না এই নামে কেউ ইমিগ্রেশন অতিক্রম করেনি। তাহলে?

শেষতক চেনাজানা এক রিপোর্টারকে ফোন করে নিশ্চিত হলেন, গণমাধ্যমের খবরটি সঠিক নয়।

দেশের প্রায় সবকটি অনলাইন ও অধিকাংশ পত্রিকার বিনোদন পাতাজুড়ে ছিলো কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের বাংলাদেশে আসার খবর।

গতকাল রোববার রাতের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় এসেছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আজ থেকে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল পরিচালিত ‘জ্যাম’ ছবির  শুটিংয়ে অংশ নেবার কথাও জানানো হয় গণমাধ্যমের খবরে।

তবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে, আগমনী যাত্রী তালিকা দেখে তারা নিশ্চিত করেন গতরাতে এই নামে কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।

তবে কি গণমাধ্যমের খবর সঠিক নয়?

বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের ঢাকা না আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, এ যাত্রায় তিনি আসতে পারেন নি। কি কারণে সেটা স্পষ্ট না করলেও শিগগির ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত দেশে এসে চুক্তি মতো তার ছবিতে অভিনয় করবেন বলেও জানান।

এর আগেও শিডিউল ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় সময় দিয়েও বাংলাদেশে আসতে পারেন নি ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ তারকা।

তার মাঝে রোজভ্যালির ১৭ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারির সাথে জড়িয়ে  নিজ দেশেই বেশ চাপের মুখে রয়েছেন ঋতুপর্ণা। প্রসেনজিতের পর এই অভিনেত্রীকে ডেকে পাঠিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ওই অনিয়ম নিয়ে জেরাও  করেছে।

কলকাতার সূত্রমতে, রোজভ্যালির সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর একটি বিদেশ সফরের সঙ্গে রোজভ্যালি সংস্থার আর্থিক লেনদেন হয়েছে। বিষয়টি আদৌ ঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখতেই ইডি অফিসাররা মুখোমুখি হন এই অভিনেত্রীর।

সব ছাপিয়ে আবেদনময়ী এই অভিনেত্রী বাংলাদেশের আরো একটি ছবিতে বিশেষ একটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে আসছেন, এটাই ছিলো গণমাধ্যমের শিরোনাম।

আহমেদ জামান চৌধুরীর মূল ভাবনায়  ‘জ্যাম’ ছবির কাহিনী বিন্যাস করেছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল ও নায়ক মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না। চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন পান্থ শাহরিয়ার।  ছবিতে আরও অভিনয় করছেন আরিফিন শুভ, ফেরদৌস ও পূর্ণিমা।

‘শ্বেতপাথরের থালা’র মাধ্যমে রূপালি পর্দায় ঋতুপর্ণার অভিষেক হয়। সেটি ১৯৯৫ সালে কথা। ছবিতে সহ-অভিনেত্রীর চরিত্রে কাজ করেন তিনি। প্রভাত রায়ের ছবিটি ওই বছর শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবি হিসাবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

এরপর ‘সুজন সখী’, ‘নাগপঞ্চমী’, ‘মনের মানুষ’ ও ‘সংসার সংগ্রাম’ ছবির মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ঋতুপর্ণা।

বাংলাদেশে সাগরিকা, স্বামী ছিনতাই,  রাঙা বউ, একটি সিনেমার গল্পসহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা।

ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘দহন’ (১৯৯৭),   ‘উৎসব’ (২০০০),  অপর্ণা সেনের  ‘পারমিতার একদিন’ (২০০০) ও বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ (২০০২) ছবিতে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। এছাড়া ‘দহন’ ছবিতে এক নববিবাহিতার  ধর্ষিতা হবার চরিত্রে অভিনয় করে ১৯৯৮ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর