৭ বছর পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের (২০১৯-২১) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৭ জুলাই। দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন।
প্রথম ধাপের ভোটে ১৯ পদের জন্য ৪১ জন লড়বেন। দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত ১৯ জনের ভোটে নির্বাচিত হবে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির পরিসংখ্যান বলছে এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯০। অর্থাৎ ১৯০ জন প্রযোজক এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। এত সংখ্যক প্রযোজক থাকলেও ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে সিনেমা মুক্তি পেয়েছে মাত্র ২২টি। যার মধ্যে শাকিব খানের ‘পাসওয়ার্ড’ ছাড়া অন্য কোন সিনেমা ব্যবসাসফল হয়নি।
অভিযোগ আছে, প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচনে লড়া ৪১ জনের মধ্যে অনেকেই সিনেমা প্রযোজনা করেছেন ৫ থেকে ৭ বছর আগে। অথচ নির্বাচন উপলক্ষে তাদেরই সরব প্রচারণা চোখে মিলছে। গত কয়েক বছরে দেশে সিনেমা প্রযোজনা বলতে যা হয়েছে তা করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও শাপলা মিডিয়া। এর বাইরে সম্প্রতি শাকিব খানের এসকে ফিল্মস চলচ্চিত্র পড়াকে চাঙ্গা রেখেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেছেন, ‘এই নির্বাচনে লড়া ৪১ জন যদি বছরে একটি করে মানসম্মত সিনেমা তৈরি করে তাহলে আমাদের দেশের সিনেমার অবস্থা এক বছরেই পরিবর্তন হয়ে যাবে। কিন্তু এই ভোটের সময় এসব প্রযোজকদের দেখা মেলে কিন্তু ভোট শেষ হলেই হাতে গোনা কয়েকজন প্রযোজকই টানছেন বাংলা সিনেমাকে।’
২৭ জুলাইয়ের নির্বাচনকে ঘিরে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকলে স্বপ্ন দেখছেন যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচিত হলে বাংলা চলচ্চিত্রের চলমান সংকট অনেক কমে আসবে। এখন দেখার বিষয় ভোটের পরে কতটা সরব থাকেন ভোটের আগে সরব প্রযোজকরা।
যারা থাকছেন নির্বাচন কমিশনে
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনকৃত এফবিসিসিআইর অঙ্গসংগঠন। এবারের নির্বাচনে কোনো প্যানেল থাকছে না। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অর্থাৎ নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিরাজুল ইসলাম উকিল। সদস্য হিসেবে থাকবেন মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন (উপসচিব), মো. খাদেমুল ইসলাম (সহকারী প্রোগ্রামার)। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন আবদুর রহিম খান (যুগ্ম সচিব), সদস্য আব্দুছ সামাদ আল আজাদ (যুগ্ম সচিব), সৈয়দা নাহিদা হাবিবা (উপসচিব)।
যে কারণে ৭ বছর পর নির্বাচন
মামলা ও নানা জটিলতার কারণে ৭ বছর ধরে বন্ধ ছিল এই সমিতির নির্বাচন। এর আগে নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ১৮ আগস্ট। ২০১৬ সালে প্রযোজক নাসির হোসেনের করা রিটের কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। পরপর তিনবার কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না এফবিসিসিআইর অধীন সংগঠনের এমন নির্বাচনী রীতির খেলাপ করা হয়েছে মর্মে নাসির হোসেন বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচন স্থগিত করেন। যদিও এর আগে ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মামলার কারণে নির্বাচন সাময়িক বন্ধ করা হয়েছিল।