একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
শনিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে সঙ্গীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাতেই বাসায় ছুটে যান সঙ্গীতশিল্পী শওকত আলী ইমন ও বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ডলি ইকবালসহ অনেকে।
বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া চারটি গান স্থান পেয়েছে।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর জন্ম ১৯৫২ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকায়। তার বাবা এম ফজলুল হক, মা আসিয়া হক। মায়ের হাতেই ছোটবেলায় শাহনাজের গানের হাতেখড়ি। পরিবারের সবার কাছে তিনি ছিলেন আদরের শাহীন।
ছোটবেলাতেই তিনি শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। সেই থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়মিত গান করেছেন। টেলিভিশনে গান গাইতে শুরু করেন ১৯৬৪ সাল থেকে। সত্তরের দশকে অনেক উর্দু গীত ও গজল গেয়েছেন।
প্রখ্যাত গজলশিল্পী মেহেদী হাসানের কাছে তিনি গজল শিখেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি আবুল বাশার রহমতউল্লার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক মেয়ে নাহিদ রাহমত উল্লাহ এবং এক ছেলে একে এম সায়েফ রহমত উল্লাহ। তিনি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু সম্মানায় ভূষিত হয়েছেন।
শাহনাজ রাহমত উল্লাহর ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন এদেশের প্রখ্যাত একজন সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন এদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক।
জীবনের শেষ দিকে তিনি সঙ্গীত ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবুও তার গাওয়া গানের মাঝে তার ভক্ত শ্রোতারা তাকে খুঁজে বেড়াতেন।
তার উল্লেখযোগ্য গান হলো- এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল্, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ও আমায় যদি প্রশ্ন করে, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়।